মনিরুজ্জামান ঝালকাঠি থেকে: ঝালকাঠি জেলায় চলতি বছর ৪৬ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হলেও অধিকাংশ জমিরি ধানেই পাতাবটা পোকায় আক্রান্ত। আগামী ১ মাসের মধ্যেই ধানের শীষ বের হওয়ার পূর্বক্ষণে এ পোকার আক্রামনে কৃষকদের মাঝে আশংকা ও হতাশা দেখা দিয়েছে। আক্রান্তের পরিমান এতটা নয় তাই আতংকিত বা উৎপাদন ব্যাহত হবার আশংকা নেই বলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মন্তব্য করছে। অথচ কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন পোকা আক্রমন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে এ আক্রমন প্রতিরোধে পরামর্শের পাশাপাশি ফ্রি চার্জার স্প্রে মেশিন ও কীটনাশক ঔষধ দরকার বলে কৃষকরা দাবী করেছে। সরেজমিনে গিয়ে দূর থেকে বোঝার কোন উপায় নেই আমনের এসব ক্ষেত পোকাক্রান্ত। অনেক ক্ষেতে সবুজ থাকলেও অনেক স্থানে ক্ষেতে ধানচারা হলদেটে রং ধরে শুকিয়ে যাচ্ছে। কাছে না গেলে বোঝার উপায় নেই পাতাবটা পোকায় ক্ষেয়ে ফেলছে ধানের গোছার মূল পাতা। আমন ধানে ব্যাপক পাতাবটা পোকা আক্রান্ত হওয়ায় দিশেহারা কৃষকরা। ধানের শীষ বেরহওয়ার পূর্বক্ষণে পাতাবটা পোকার এ আক্রমনে আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে বলে তারা আশংকা প্রকাশ করেছে। ঝালকাঠির ৪ উপজেলায় খোজখবর নিয়ে আমন আবাদে পোকার আক্রমনের একই তথ্য পাওয়া গেছে। ধানসিড়ি ও পোনাবালিয়া ইউনিয়নের ৮/১০জন কৃষকের সাথে আলাপকালে জানায়, তারা আমন আবাদের এই পোকা দমনে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নিজেরাই ঔষধ ও স্প্রে মেশিন ক্রয় করে কীটনাশক দিয়ে যাচ্ছে। তবে বেশীর ভাগ কৃষকের সেই সামর্থ না থাকায় তাদের ধান ক্ষেত পোকাক্রান্ত হয়ে হলদেটে রংয়ে পরিনত হয়েছে। কৃষি বিভাগ উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে নতুন চার্জার স্প্রে মেশিন দেয়ার কথা জানালেও মাঠে তার কোন অস্থিত্ব মেলেনি। দু’এক স্থানে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কিছু কীটনাশক ছিটানো হলেও পোকের প্রতিরোধক হিসাবে তেমন কার্যকর হচ্ছেনা। এ বিষয়ে ধানসিড়ি ছত্রকান্দা ব্লকের এসএএও আসাদুজ্জামান পার্শবর্তী ও পোনাবালিয়া ইউনিয়ন ব্লকের এসএএও সাহেদ আলী জানান, তাদের পক্ষ থেকে প্রতি এলাকায় একটি স্কট গঠনের মাধ্যমে ৪/৫াট ষ্প্রে মেশিন দিয়ে একেক দিন একেক এলাকায় কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকরা নিজেরাও তাদের স্ব-উদ্দোগে এসব পোকাক্রান্ত আমন ক্ষেত রক্ষার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ আবুবকর সিদ্দিক, চলতি মৌসুমে বেশকিছু এলাকায় স্থানীয় জাতের আমন আবাদে পোকার আক্রাম লক্ষ করায় আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিন কাজ শুরু করেছে। শতকরা ২৫ ভাগ ধানে পোকার আক্রমন হলে সেখানে কৃষকদের অনুমদিত কীটনাশক দেয়ার পরামর্শ দেয়ায় পোকার আক্রামন অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে এসেছে। তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নেয়ায় আমন আবাদ তেমন ক্ষতিগ্রস্থ হবেনা বলে আশা করা যাচ্ছে।