গোদাগাড়ী, রাজশাহী প্রতিনিধি: দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম খাদ্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত রাজশাহী অঞ্চল। সেই হিসেবে গোদাগাড়ী উপজেলা ধানের উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ দিন আগে হতেই নতুন ধান কাটামাড়াই ও বাজারে বেচাকেনার কাজটিও চলছে। কিন্তু ধানের আবাদের খরচের সাথে বিক্রির দাম ভালো না পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। মাঠের ফলন দেখে কৃষকের প্রাণে ঝিলিক এলেও শান্তি নেই মনে। তারা বলছেন, এখনও গত মৌসুমের ধানই তাদের গোলায়। এরই মাঝে উঠছে নতুন ফসল। বাড়তি টাকা খরচ করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলালেও উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত । গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন ধানের বাজার ঘুরে জানাগেছে, ধানের আবাদ করে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে ধানের কাঙ্খিত দাম না পেয়ে। কৃষকদের উৎপাদন খরচই উঠছে না বরং ক্ষতি হচ্ছে। পেটে খেতে হবে তাই বাধ্য হয়ে আবাদ করতে হবে। গোদাগাড়ী উপজেলার দ্বিগ্রামের কৃষক মোয়াজ্জেন হোসেন ডাইংপাড়া বাজরে ধান বিক্রি করতে আসলে কথা হয় তার সাথে তিনি জানান, ১ বিঘা আমন ধান আবাদে খরচ হয়েছে ৭-৮ হাজার টাকা আর এক মন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৫শত থেকে সাড়ে ৫শত টাকা দরে। এতে একমন ধান বিক্রি করে পরিবারের জন্য দুই কেজি মাংশ কেনারও টাকা জুটে না তাহলে কেমন করে ধান আবাদ করব?। অন্যের জমি ঠিকা নিয়ে ধান চাষ ও দোকানে সার, কিটনাশক বাকি করে ধানের আবাদ করেছি তাই ঋনের টাকা পরিশোধ করতে ধান বিক্রি করতে বাধ্য। তারপর পরিবারের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ ও সাংসারিক খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এতে তিনি কঠিন দুশ্চিতায় আছে বলে জানান। গত সপ্তাহে গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার গুলোতে গুটি স্বর্ণা, সুমন স্বর্ণা, ব্রি-২৮ সহ ভিন্নি জাতের ধান বেচা কেনা হয়েছে সাড়ে ৫শত থেকে ৬২০ টাকা পর্যন্ত প্রতিমন। গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানাযায়, এবার গোদাগাড়ী উপজেলায় আমন ধানের আবাদ হয়েছে ২৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে। গতবারের চাইতে কিছুটা কম। ধানের ফলও ভালো হয়েছে বিঘা প্রতি ফলন হচ্ছে ১৫-১৮ মন। কিন্তু বাজারে দাম না থাকায় কৃষকরা ধানের চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে বলে জানান। উপজেলা কৃষি অফিসার মোজদার হোসেন বলেন, ধানের বাজার দাম না থাকায় কৃষকরা বেশ হতাশা প্রকাশ করছে তবে দাম ভালো পেলে কৃষকরা এহতাশা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে এবং ধানচাষে বেশী উদ্বুদ্ধ বলে জানান। কৃষক নকুমুদ্দীন বলেন, ধানের আবাদ করে গত দুই বছর থেকে অনেক ক্ষতি হয়েছে তাই এবার ধান চাষ না করে জমিতে টমেটো লগিয়েছি এবং তিনি এতে লাভবান হচ্ছেন বলে জানান। উপজেলার কৃষকরা সরকারের কাছে দাবি করেন যদি সরকার কৃষকদের ধানের দামের দিকে শুভ দৃষ্টি ও সঠিক বাজার তদারকি করে তাহলে কৃষকরা অনেক উপকৃত হবে।