আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানই ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর এ বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছে বলে এক ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এটি তুলে ধরা হয়েছে।
যদিও এই ঘটনায় রাজপরিবারের কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে সৌদি আরব। সম্প্রতি সৌদি আরব জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন দেশটির শীর্ষ এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সিআইএ যেসব তথ্য-উপাত্ত পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, তার মধ্যে অন্যতম যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ছোট ভাই ও আমেরিকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের সঙ্গে খাসোগির টেলিফোনালাপ। ওই ফোনালাপে খালিদ খাসোগিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গিয়ে সৌদি কনস্যুলেট থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করতে বলেন এবং এই নিশ্চয়তা দেন যে তার কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু খাসোগি সেখানে গিয়ে নিহত হন এবং এর দু’দিন পরই খালিদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে তড়িঘড়ি করে সৌদি আরবে ফিরে যান। তাকে আর ওয়াশিংটনে ফেরত পাঠানো হয়নি।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেট থেকে করা একটি ফোনকলও আমলে নিয়েছে সিআইএ। ওই ফোনকলে খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘাতক দলের সদস্য মাহের মুতরেব জানান, ‘অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে’। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট মিত্রকে বাঁচাতে চেষ্টা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সিআইএর এই প্রতিবেদনের পর সৌদির ক্রাউন প্রিন্সকে বাঁচানোর চেষ্টা ট্রাম্পের জন্য আরো জটিল হতে পারে। এই প্রতিবেদনের বিষয়ে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এটি গোয়েন্দাদের বিষয়। তবে এ বিষয়ে সিআইএ বা রাজ্য বিভাগ মন্তব্য করেনি।
গত বৃহস্পতিবার খাসোগিকে টুকরো টুকরো করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানিয়েছে সৌদি সরকারের আইনজীবী। এছাড়া ১৭ জন সৌদি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া এখন পর্যন্ত খাসোগির মৃতদেহের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় শুক্রবার পবিত্র মক্কা ও মদিনাসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে খাসোগির গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সৌদি সরকার এখন পর্যন্ত খাসোগির মরদেহ হস্তান্তর না করায় এ জানাজার আয়োজন করা হয়। মদিনার মসজিদে নববীতে জানাজায় খাশোগির ছেলে সালাহ খাশোগিও অংশ নেন।