স্টাফ রিপোর্টার : মহালয়ার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতার শুরু হয়েছে আজ শনিবার। আগামী ৩ অক্টোবর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল পূজা; যা শেষ হবে ৮ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বির্সজনের মধ্য দিয়ে।
অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভ শক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এবার মর্ত্যে আসবেন দেবী দুর্গা। ভোরে মহালয়ার ঘট স্থাপন, মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খধ্বনি ও চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে আবাহন জানানো হয়েছে দেবীকে।
পুরাণে আছে, অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হয়েছিলেন। এই অশুভ শক্তি বিনাশ করতে একত্র হন দেবতারা। অসুরের বিনাশে এক মহাশক্তির আবির্ভাব ঘটে। দেবতাদের তেজোরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা।
সনাতন বিশ্বাস মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় এবার দেবী দুর্গার আগমন ঘটবে ঘোটকে, গমনও হবে ঘোটকে।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত ধীমান দাস বলেন, দেবীর ঘোটকে আগমন মানে সবকিছু ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া। এর মানে দেবী আমাদের এক সতর্কবার্তা দিয়েই আসছেন। সুখ দুঃখকে পাশাপাশি রেখে আমরা পথ চলব।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতির নাম শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার জানিয়েছেন, এবার সারা বাংলাদেশে ৩১ হাজার ১০০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের তুলনায় এবার মণ্ডপ বেড়েছে ১০০০টি। ঢাকা মহানগরে এবার ২৩৭টি মণ্ডপে পূজা হবে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৩৪টি।
হিন্দু আচার অনুযায়ী, মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা- এই তিন পর্ব মিলে দুর্গোৎসব।
মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয় দেবীপক্ষের। এর আগের পক্ষ হলো পিতৃপক্ষ। এই পক্ষে ভক্তরা তাদের পূর্বপূরুষের আত্মার প্রীতির জন্য অন্ন-জল নিবেদন করে থাকেন। শাস্ত্রে একে বলা হয় তর্পণ।
শনিবার ভোর থেকে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ সারাদেশে শুরু হয় মহালয়ার আচার-অনুষ্ঠান। ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজার মাধ্যমে শুরু হয় মহালয়ার আনুষ্ঠানিকতা।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আসেন ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস। তবে তিনি সেখানে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি।
আগামী ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় হবে দেবী দুর্গার বোধন। ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় দুর্গাদেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মাধ্যমে পূজার মূল আচার অনুষ্ঠান শুরু হবে।
৫ অক্টোবর সকালে নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপনের পর শুরু হবে মহাসপ্তমী পূজা। ৬ অক্টোবর মহাঅষ্টমী পূজা, সেদিন হবে সন্ধিপূজা । রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে হবে কুমারী পূজা।
৭ অক্টোবর সকাল বিহিত পূজার মাধ্যমে হবে মহানবমী পূজা। ৮ অক্টোবর সকালে দর্পন বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।