অর্থনৈতিক ডেস্ক: বড় ধরনের ধসের পর নানামুখী তৎপরতায় বুধবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে দেশের শেয়ারবাজারে। বৃহস্পতিবারও লেনদেনের শুরুতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রয়েছে। তবে ধীর গতিতে বাড়ছে সূচক। এর আগে বড় ধরনের ধসের কবলে পড়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ৮ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্সের ৪১১ পয়েন্ট পতন হয়। এতে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি ৪ হাজার ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করা সূচকটি শুরুর অবস্থান বা ভিত্তি পয়েন্টের নিচে নেমে যায়।
শেয়ারবাজারের এ অবস্থাকে ২০১০ সালের মহাধসের থেকেও খারাপ বলে অভিহিত করেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। দরপতনের প্রতিবাদ জানাতে মতিঝিলে অবস্থিত ডিএসইর আগের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন কিছু বিনিয়োগকারী।
অবস্থার ভয়াবহতা অনুধাবন করে ২০ জানুয়ারি জরুরি বৈঠক ডেকেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে এ পর্যন্ত যতগুলো প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে সর্বোত্তম প্রস্তাব বাস্তবায়নে সহায়তা দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রতিনিধিরা। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কার্যালয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থার জরুরি বৈঠক হয়।
বিএসইসির কমিশনার স্বপন কুমার বালার সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএমবিএ, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) এবং শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সভায় কমিশনের পক্ষ থেকে স্টেকহোল্ডারদের ২০ জানুয়ারির বৈঠকে শেয়ারবাজারের জন্য করণীয় এবং কার্যকরি প্রস্তাব রাখার আহ্বান করা হয়।
বিভিন্ন পক্ষের এমন নানামুখী তৎপরতায় বুধবার লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের আভাস মেলে। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টায় ডিএসইর প্রাধান মূল্যসূচক ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের শেষদিকে এসে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। এতে সূচকের বড় উত্থান কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৩১ পয়েন্ট।
উর্ধ্বমুখী প্রবণতা বৃহস্পতিবারের লেনদেনের শুরুতেও অব্যাহত রয়েছে। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান সূচক ১৯ বেড়ে ৪ হাজার ৮৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে ৯১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রথম ঘণ্টায় বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ১১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩০টির। ৬৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৪২২ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ২১ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ৯৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৯টির, কমেছে ৪৯টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির।