ক্রীড়া প্রতিবেদক : প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক কোনও টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটের দ্বৈরথটা শেষ কয়েক বছরে হয়ে জন্ম নিয়েছে শ্বাসরূদ্ধকর লড়াইয়ে। সেটি বড়দের ক্রিকেটে হোক কিংবা ছোটদের। যার সবশেষ উদাহরণ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা সে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠতে পারেনি, পারেনি ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল পাকিস্তানও। বাংলাদেশ ফাইনাল খেললেও শেষ মুহূর্তে পরাজয় বরণ করেছে।
বড়দের ক্রিকেটের এমন অসংখ্য উদহারণ থাকলেও ছোটরা গত দুই বছরের মধ্যে তিনবার ভারতের সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই করেছে। যদিও হারের বৃত্তটা ভাঙতে পারেনি। এবার কি তাহলে ভারত জুজু কাটবে, নাকি আবারও না পাওয়ার বেদনায় নীল হবে বাংলাদেশ। নারী ক্রিকেটাররা ছাড়া বাংলাদেশের কোনো দলই ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল জিততে পারেনি।
রোববার পচেফস্ট্রুমে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হচ্ছে হাইভোল্টেজ ম্যাচটি। গাজী টিভি ও স্টার স্পোর্টসে ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে।
আজ জিতলেই নতুন এক ইতিহাস গড়বে আকবর আলীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। যদিও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে ইতিমধ্যে নতুন ইতিহাস লিখে ফেলেছে তারা। সেটাতে তুলির শেষ আচড়টুকু দিতে পারলেই হবে নয়া ইতিহাস।
যদিও পথটা বেশ কঠিন। কারণ, বাংলাদেশের সামনে যে শক্তিশালী ভারত। যারা রেকর্ড চারবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে।
এবারের যুব বিশ্বকাপে অবশ্য বাংলাদেশ-ভারত দুটি দলই অপরাজিত। তবে আজ একটি দলকে হার মানতেই হবে। বিজয়ী দল হবে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। ম্যাচটি যেহেতু ফাইনাল, সেহেতু উত্তেজনার পারদও থাকবে আকাশচুম্বী। আর লড়াইটাও হবে হাড্ডাহাড্ডি।
ফাইনালে ভারতের কার্তিক তেয়াগি কিংবা শুশান্ত মিশ্রার পেস আক্রমণের কাউন্টার দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের রয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব ও শরিফুল ইসলাম। ভারতের মায়াবী স্পিনার রবী বিষ্ণু থাকলে বাংলাদেশের আছেন রকিবুল হাসান। আর ভারতের যশস্বী জয়সাওয়ালের মতো বাংলাদেশের আছেন তানজিদ হাসান।
তবে পেসারদের দুর্দান্ত একটি স্পেল কিংবা স্পিনারদের মায়াবী ঘূর্ণি বদলে দিতে পারে ফাইনালের ভাগ্য।
যদিও পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে ভারত বেশ এগিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে। যুব বিশ্বকাপ সবশেষ বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৮ সালে। সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা হয়েছিল দল দুটির। যথারীতি ভারত হয়েছিল বিজয়ী। এ ছাড়া আরো সাতবার মুখোমুখি হয়েছে দল দুটি। তার মধ্যে দুটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। বাকি পাঁচটিতে ভারত ৪, বাংলাদেশ ১।
২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ মাত্র ২ রানের ব্যবধানে হেরেছিল। ২০১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালেও বাংলাদেশ হেরেছে ৫ রানে। সবশেষ গেল বছরের জুলাইতে ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তাই একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ফাইনাল অপেক্ষা করছে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য।
অবশ্য ফাইনাল হিসেবে চাপ নিচ্ছে না বাংলাদেশ। যেমনটা বলেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব, স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছি আমরা। কেউ চাপে নেই। কাউকে ভয় পাওয়ারও কিছু নেই। আর একটা ম্যাচ বাকি, যা জিততে চাই সবাই।
তারপরও ম্যাচটি যখন ফাইনাল, তখন চাপ নিতে না চাইলেও চলে আসে চুপিসারে ভেতরে ভেতরে। এখন দেখার বিষয় চাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে বাংলাদেশকে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের অনন্য সুখস্মৃতি এনে দিতে পারেন কিনা জয়-আকবর আলীরা।