ক্রীড়া প্রতিবেদক : প্রাণসংহারী নভেল করোনাভাইরাসের থাবায় কাঁপছে সারা বিশ্বে। স্থবির হয়ে গেছে বিশ্ব। থমকে আছে ক্রীড়াঙ্গন। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। করোনার কারণে বাংলাদেশে সব ধরণের খেলাধুলা বন্ধ। তবে শুধু খেলা বন্ধ বা অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ করলেই হবে না। মোকাবেলা করতে হবে করোনার প্রাদুর্ভাব।
বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় তাই অর্থ অনুদান দিচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। নিজেদের এক মাসের বেতনের অর্ধেক দান করে দিচ্ছেন মুশফিকুর রহীম, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা।
সবমিলিয়ে মোট ২৭ জন খেলোয়াড়, তাদের একমাসের বেতনের অর্ধেক টাকা দান করছেন। দানকৃত এ অঙ্কের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩১ লাখ টাকা। তবে করবাবদ বাদ পড়বে ৫ লাখ টাকা। ফলে ২৬ লাখ টাকা ব্যবহার করা যাবে করোনা ইস্যুতে। এই অর্থ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার জন্য গঠিত ফান্ডে দেওয়া হবে। অর্থটি বিসিবির মাধ্যমে দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক বিষদ বার্তা দিয়েছেন জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীম। যেখানে তিনি সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসার।
মুশফিক তার পোস্টে লিখেছেন, ‘আসসালামুআলাইকুম। আপনারা সবাই জানেন করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চারদিকে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯ রোগ। এই রোগ প্রতিরোধে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে যার যার জায়গা থেকে।
সেটির অংশ হিসেবে আমরা ক্রিকেটাররা একটা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি, যেটি হয়তো অনুপ্রাণিত করতে পারে আপনাদেরও। আমরা এই মাসের বেতনের ৫০ শতাংশ দিয়ে একটা তহবিল গঠন করেছি। এই তহবিল ব্যয় হবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও সাধারণ মানুষ যাদের গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় জীবন চালিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়।
তহবিলে জমা পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো। কর কেটে থাকবে ২৬ লাখ টাকা। করোনার বিরুদ্ধে জিততে হলে আমাদের এই উদ্যোগ হয়তো যথেষ্ট নয়। কিন্তু যাদের সামর্থ্য আছে সবাই যদি এক সঙ্গে এগিয়ে আসেন কিংবা ১০জনও যদিও এগিয়ে আসেন, এই লড়াইয়ে আমরা অনেক এগিয়ে যাব। হ্যাঁ, এরই মধ্যে করোনা মোকাবিলায় অনেকে এগিয়ে এসেছেন। তাদের অবশ্যই সাধুবাদ জানাই।
কিন্তু বৃহৎ পরিসরে যদি আরও অনেকে এগিয়ে আসে, তাহলে আমরা এই লড়াইয়ে জিততে পারব ইনশাআল্লাহ। সেই সহায়তা হতে পারে ১০০, ৫০০০ কিংবা ১ লাখ টাকা দিয়ে। টাকা দিয়ে না হোক হতে পারে দুস্থ মানুষকে খাবার কিনে দিয়ে। আসুন পুরো দেশকে আমরা একটা পরিবার ভেবে চিন্তা করি এবং এই বিপদে সবাই সবাইকে সহায়তা করি। আল্লাহ আমাদের নিশ্চয়ই রক্ষা করবেন। ইনশাআল্লাহ।’
তামিম ইকবালও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই যতটা ব্যাপক, এই অর্থ হয়তো খুব বড় অঙ্ক নয়। তবে বিন্দু বিন্দু জল মিলেই হয়ে ওঠে মহাসাগর। আমরা সবাই যদি নিজেদের জায়গা থেকে চেষ্টা করি, যত ছোট অবদানই হোক, সবাই মিলে সেটিই বড় হয়ে উঠবে। চারপাশের সবার সমালোচনায় মেতে না থেকে আমরা যদি নিজেরা দায়িত্ব নেই ও নিজেদের সাধ্যমতো অবদান রাখি, তাহলেই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে আমাদের জয় সম্ভব। সবাই ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন। নিজে ভালো থাকুন, দেশকে ভালো রাখুন।’