স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্য খাতে যাঁরা নিয়োজিত আছেন, তাদের পুরস্কৃত করা হবে। তাদের জন্য বিশেষ বীমার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু যারা পালিয়ে আছেন, তারা এই প্রণোদনা পাবেন না।
মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যারা জীবন বাজি রেখে কাজে নিয়োজিত, তাদের পুরস্কৃত করা হবে। তাদের তালিকা করতে বলেছি। তাদের সম্মানী দিতে চাই। তারা বিশেষ বীমা পাবেন। আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে যদি কোনো চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হোন তাহলে পদবী অনুযায়ী তাদের ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা স্বাস্থ্যবীমা করা হবে। আর কেউ মারা গেলে তার ৫ গুণ অর্থ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া কথাও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, যারা করোনার সময় কাজ করছেন, জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন, এই প্রণোদনা তাদের জন্য। আর যারা পালিয়ে আছেন, তারা এই প্রণোদনা পাবেন না। ভবিষ্যতে তারা ডাক্তারি করতে পারবেন কি না, সে চিন্তাও করতে হবে। কেউ যদি এখন কাজে আসতে চান, তবে তিন মাস তার কাজ দেখে তাদের কথা চিন্তা করা হবে। কাউকে শর্ত দিয়ে কাজে আনবেন না তিনি।
করোনাভাইরাসের রোগী সন্দেহে রাজধানীর কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র সে যেকোনোভাবে রোগে আক্রান্ত হয় কিন্তু সে যখন হাসপাতালে চিকিৎসা করতে যায়, এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরে বেড়ায় কোনো ডাক্তার পায়নি চিকিৎসা করতে। এটা সত্যিই খুব কষ্টকর, সত্যিই খুব দুঃখজনক যে ডাক্তাররা কেন চিকিৎসা করবে না।
প্রধানমন্ত্রী সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বাইরে যারা আছেন, এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, তাদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করতে বলেছেন। এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে তারা রেশন কার্ড করতে পারবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা দিন আনে দিন খায়, ছোটখাটো ব্যবসা-বাণিজ্য করেন, তাঁদের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। তাঁরা নানা ধরনের কষ্ট সহ্য করছেন। অনেকে আছেন, যাঁরা অনুদান নেবেন না, কিন্তু কিনে খেতে চান, তাঁদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে। যাঁরা হাত পাততে পারবেন না, তাঁদের তালিকা করতে হবে। তাঁদের বাচ্চা নিয়ে যাতে কষ্ট না হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতটুকু মাটিও যেন অনাবাদি না থাকে। তিনি এ ব্যাপারে কৃষিমন্ত্রী, মৎস্যমন্ত্রীকে বলেছেন।
দুর্ভোগের সময় কেউ অনিয়ম করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোগ লুকাবেন না। এটা লজ্জার বিষয় না। মাঠপর্যায়ে যারা করানাভাইরাস মোকাবিলায় কাজ করছেন, প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ সবাইকে ধন্যবাদ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।