স্বাধীন বাংলা ডেস্ক: মরণঘাতী করোনাভাইরাসে প্রকম্পিত বিশ্ব সম্প্রদায়। মৃত্যুর মিছিলে প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এর প্রতিরোধে হিমশিম খাচ্ছে পুরো বিশ্ব। ভাইরাস থেকে বাঁচতে এবং পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিশেষজ্ঞরা প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নতুন নতুন তথ্য দিচ্ছেন। এরই মধ্যে জানা গেলো- প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসটি বাতাসেও ছড়াতে পারে।
ইতোমধ্যে ভাইরাসটি আমাদের দেশেও হানা দিয়েছে। আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। রাষ্ট্রীয় সাধারণ ছুটির মধ্যে পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে বিভিন্ন পদক্ষে নেয়া হচ্ছে। লক্ষ্য একটাই, নতুন প্রাণঘাতী ভাইরাস সংক্রমনের হার কমিয়ে আনা। সংক্রমণ কমিয়ে আনলে মৃতের হারও কমে আসবে।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে গবেষকরা প্রথমে ধারণা করছিলেন এটি কেবল ড্রপলেট ইনফেকশন মানে মুখ থেকে নিঃসৃত দিয়ে হতে পারে। পরে গবেষণার মাধ্যমে জানা যায়, এর আকার ৪ মাইক্রনের চেয়ে কম মানে এরোসল টাইপ। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ার সামর্থ রয়েছে এর। তাই একে মোকাবেলা করতে হিমশিম খাচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে আসছে, যারা আক্রান্ত তারাই মাস্ক ব্যবহার করবে তবুও আমরা সকলেই এটি ব্যবহার করেছি। যার ফলে এটির ব্যাপক বিস্তার হয়তো কিছুটা কম। বড় বড় দেশে এতো এতো মানুষ আক্রান্ত কারণ এই রোগ যে শুধু যারা আক্রান্ত তাদের দ্বারা ছড়ায় তা নয় বরং যাদের লক্ষণ নেই তারাও ছড়ায়।
আমাদের দেশে এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে আসলে? স্টেজ ৩ না ৪? কেউ বলছেন ৩ কেউবা বলছেন ৪। যাই হোক তা মোকাবেলা করতে হবে।
আমাদের দেশ চীনের মত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইনের ব্যবস্থা করতে পারেনি প্রথম থেকে আবার অনেক দেশের মত হাজার হাজার পরীক্ষা শুরু করতে পারেনি প্রাথমিক পর্যায়ে। যা হওয়ার হয়ে গেছে, বের হয়ে আসতে হবে সেই পর্যায় থেকে।
পাশের দেশ ভারতের একটি উদাহরণ দেখতে পারি আমরা যেখানে ছত্রিশগড়ে যাদের হোম কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়েছে বাধ্যতামূলকভাবে তাদের সবাইকে মোবাইলে একটি অ্যাপস ডাউনলোড করে দেওয়া হয় যা দিয়ে স্থানীয় পুলিশ তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এমনকি সেই ব্যক্তি যদি নির্ধারিত স্থানের চেয়ে ২০০ মিটার বাইরে যান তাহলে সেটি তৎক্ষণাৎ পুলিশকে জানিয়ে দিচ্ছে। তাহলে তাকে নজরদারি করা বেশ সহজেই সম্ভবপর হয়।
আবার গোয়াতে তাদের দেশের নির্ধারিত ২১ দিনের লকডাউনের শেষ দিকে তিনদিন ব্যাপী ৭০০০ জনের একটি দল তৈরি করে প্রতিটি মহল্লা, বাড়িতে যোগাযোগ করবে উপস্থিত হয়ে। সঙ্গে থাকবে থার্মোমিটার, কিছু প্রশ্ন সম্বলিত একটি প্রশ্নপত্র যার মাধ্যমে বের করে আনা সম্ভব সম্ভাব্য আক্রন্ত কিনা ব্যক্তি বা পরিবারটি। সন্দেহ হলে সেখানেই কালেকশান করা হবে স্যাম্পল এবং তার ভিত্তিতে ব্যক্তি বা পরিবারকে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
উপরের দুইটি কাজই কিন্তু আমাদের দেশে করা সম্ভব। আমাদের যেহেতু পরীক্ষা করার সেন্টার বৃদ্ধি পেয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কারণে মানুষ এখন বেশিরভাগই বাসায় অবস্থান করছে তাই এখনই উপযুক্ত সময় আক্রান্ত খুঁজে বের করা।
রোগী রোগ নিয়ে আসবে তারপর চিকিৎসা দেওয়া হবে সেটির সঙ্গে বর্তমান রোগটি মেলে না। এটি সমগ্র সমাজকে একই সঙ্গে আক্রান্ত করে দিচ্ছে মুহূর্তে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় প্রশিক্ষিত জনবল দিয়ে এলাকার প্রতিনিধি দিয়ে একগুচ্ছ গ্রুপ তৈরি করা যায় সহজেই।
উপরেই উল্লেখ করেছি জাপানের মত আমরা পারবো না দীর্ঘদিন অর্থনীতির চাকা আটকে রাখতে। সময়ের এক ফোঁড় আর অসময়য়ের অসংখ্য ফোঁড়। সিলিকন ভ্যালি কেন্দ্রিক মতয়ানি জাদেজা ফাউন্ডেশন ভারতে আগামী ১০ তারিখ থেকে ৭২ ঘণ্টার একটি অনলাইন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে
যেখানে পুরস্কার হিসাবে ১০ হাজার ডলার ঘোষণা করা হয়েছে। উদ্দেশ্য কী? একটাই উদ্দেশ্য, ৩০০০ হাজারের বেশি প্রতিযোগী থেকে আইডিয়া নেওয়া কিভাবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোন জিনিসটা প্রয়োগ করা কোন সেক্টরে বেশি জরুরি।
সেক্টরগুলোর মাঝে রয়েছে- 1)Medical treatment and testing; 2) Travel and Tourism; 3) Mitigation – Isolation, protection/masks, and social distancing in India; 4) Social life,welfare, and awareness; 5) Research and development; 6) Open innovation for COVID-19; 7) Education and awareness; and 8)Industry.
তারা এসব ডাটা নিয়ে কেন্দ্রিয় সরকারকে পরামর্শ দেবে কীভাবে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করা যায়। কারণ এই যুদ্ধে সমগ্র বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্থ। যে যত দ্রুত কাটিয়ে উঠবে এই অবস্থা সেই টিকে থাকবে পরবর্তীতে।