স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট: বাংলাদেশে করোনাভাইরাস চিকিৎসার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালের চিকিৎসকরা যে আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন সেই হোটেলের বাবুর্চিসহ অনেক কর্মচারী করোনা ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে গেছে। সেখানে অবস্থানরত ৫৬ জন ডাক্তার পড়েছেন খাবার নিয়ে বিপাকে। সরকার বাধ্য হয়ে ডাক্তারদের অন্যত্র থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে।
দুই সপ্তাহ ধরে স্বেচ্ছাসেবী এক ক্যাটারিং সার্ভিসের সরবারহ করা খাবার খাচ্ছেন তারা। সর্বশেষ আজ বুধবার তাদের অন্য আরেকটি আবাসিক হোটেলে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
গোপনীয়তার স্বার্থে নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া ঐ চিকিৎসক বিবিসিকে বলছিলেন,
"একে তো আমরা হাসপাতালে অনেক চাপের মধ্যে কাজ করি, তারওপর দিনের পর দিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হয়না। এরপর হোটেলে ফিরে তিন বেলার সাধারণ খাবারটা যদি আপনি না পান, সেটা কতটা হতাশাজনক একটু ভাবেন!"
"কেবল বিস্কুট আর পাউরুটি খেয়ে কত থাকা যায়?"
ওই হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার আসিফ বাবু গণমাধ্যমকে জানান, সাধারণ ছুটি ঘোষণার সময় থেকে হোটেলের বাবুর্চিসহ ৩৬ জন স্টাফই করোনা আতঙ্কে পালিয়ে গেছে। এরপর থেকে হোটেলে অবস্থানরত চিকিৎসকদেও শুধু খাবার ব্যবস্থা নয়, কোন সুবিধাই দেয়া যাচ্ছিল না। হোটেলে আমি ছাড়া আর কোন কর্মচারী নেই। কর্মচারীদের ধারণা ছিল, যেহেতু চিকিৎসকরা করোনা রোগীর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। সুতরাং তাদের মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই আতঙ্কে এক রাতেই সবাই পালিয়ে যায়। তবে আবারো কর্মী নিয়োগ দিয়েছি। দু’একদিনের মধ্যে আবার সব সেবা চালু হবে।
এতদিন কিভাবে খাবার দাবার চালালেন এমন প্রশ্নের জবাবে কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালের এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রায় তিনদিন খাবারের কষ্ট করার পর একদিন অনলাইনে তারা একটি পোস্ট দেখতে পান। ঐ পোস্টে বলা হয়, চিকিৎসকদের স্বেচ্ছাসেবী একটি দল ঢাকা শহরের মধ্যে অবস্থানরত যেকোনো চিকিৎসকের জন্যে সুলভ মূল্যে খাবার সরবারহের ব্যবস্থা করছেন। এরপর অনলাইনেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা।