সময়টা এখন গতির। গতিময় এই পৃথিবীতে স্থান নেই গতিহীন কারো। আমাদের যাপিত জীবনের প্রতিক্ষণে আমরা অনুভব করছি গতির তীব্র প্রতিযোগিতা। সবকিছুকেই এখন মেপে নেয়া হচ্ছে গতির পাল্লায়। গতির বাইরে যার অবস্থান তাকে পড়ে থাকতে হচ্ছে স্থবির ম্রিয়মান হয়ে। তাই গতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না জানলে যতিময় স্থবিরতাই যে বিধিলিপি তাতে কোন সন্দেহ নেই।
গতির কথাই যখন উঠলো, এই গতি নিয়ে হাল যমানার মানুষেরা কি সব কান্ড করে বেড়াচ্ছেন তার কাসুন্দি ঘাঁটা যাক। এই যে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সব সমরবাজ তাদের জনগণের কাঁড়ি কাঁড়ি সম্পদ ব্যয় করে সুপারসনিক অর্থাৎ কিনা শব্দের চাইতে দ্রুত গতির সমরাস্ত্র উৎপাদন করে আসছিলেন- তা হঠাৎই যেন পাল্টা গতির আঘাতে ধরাশায়ী হয়ে গেল। গতির কম্পিটিশনে সবাইকে টেক্কা দিয়ে সম্প্রতি রাশিয়া উদ্ভাবন করেছে শব্দের চাইতে সাতগুণ দ্রুতগতির হাইপারসনিক মিসাইল- যার সামনে আপতত বাধা হয়ে দাঁড়ানোর মত আর কিছুই থাকলো না।
অথচ এই সুপারসনিক সমরাস্ত্র নিয়ে বিশ্ব মোড়লদের কতই না মাতামাতি। এক মোড়ল যেন আরেক মোড়লের ঘাড়ের উপর মিসাইল ফেলতে না পারেন সেজন্য মোড়লেরা আবার যার যার কৌশলগত এলাকায় বসিয়েছিলেন ‘এন্টি-ব্যালেষ্টিক মিসাইল শীল্ড’ এবং আরও কত শত ইলেকট্রোনিক গ্যাজেট।
এখন ঘটনাটা তাহলে কি দাঁড়াল! রাশিয়ার এই হাইপারসনিক মিসাইল থেকে মাথা বাঁচাতে নিদেনপক্ষে সমগতির মিসাইল উদ্ভাবন ছাড়া আর বিকল্প রইলো না। সুতরাং তামাম দুনিয়ার অস্ত্র ভান্ডারে এখনকার মওজুদ মিলিয়ন্স অব বিলিয়ন্স অব ট্রিলিয়ন ডলারের মিসাইল এবং তজ্জনিত মোতায়েন এন্টি-ব্যালেষ্টিক মিসাইল শীল্ড অক্ষম-অকেজো পড়ে থাকবে লাঠিবৎ। অর্থাৎ রাশিয়ান হাইপারসনিক মুগুর ঠেকাতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি আপডেটের নামে প্রতিযোগী দেশগুলোতে এখন বাড়তি বাজেট বরাদ্দ ছাড়া ‘গোলাম নেই- উপায় হোসেন’ অবস্থা। বলাবাহুল্য, এর তাৎপর্য- বিশ্বজুড়ে সমরাস্ত্র-প্রতিযোগিতার নতুন এক ডাইমেনশন শুরু হয়ে গেল।
গতি নামের এই ম্যাজিক সমরাস্ত্র প্রযুক্তির বাইরেও সমানভাবে ক্রিয়াশীল। গতির ভেল্কিবাজি কাজে লাগিয়ে বুদ্ধিমান আদম সন্তান পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা আমুল বদলে দেবার দ্বারপ্রান্তে প্রায় পৌঁছে গেছেন। যোগাযোগ সেক্টরে শিগগীরই আসছে বিস্ময়কর ‘হাইপার লুপ’ প্রযুক্তি যা বর্তমানকালের সর্বাধিক গতিসম্পন্ন পরিবহন বিমানের চাইতেও তিনগুণ দ্রুত গতিতে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে। অতএব গতি এবং গতিই যে আধুনিক সময়ে সবার উপরে বড় ভিলেন এবং অন্য কথায় পরম আরাধ্য ত্রাণকর্তাও বটে- সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
সে যাই হোক, একদা কাজ পাগল এক জাপানী ঘড়েল স্বীয় কর্মপোলক্ষে ‘আম-গো দ্যাশে’ ছিলেন অনেক দিন। বঙ্গভূমির গোল্ডেন অঞ্চল পরিদর্শনের প্রথম দিন রাজধানী ঢাকার রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে বেচারা বেহুদা তিন ধাক্কা খাওয়ার পর হতভম্ভ-ভয়ার্ত অবস্থায় তড়িঘড়ি ঘরে ফিরেছিলেন। অতঃপর পরদেশে বেঘোরে পৌত্রিক জীবন খোয়ানোর আশঙ্কায় তিনি আর রাস্তায় বের হননি; ঘরের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়েই মনোযোগ সহকারে এই রাজধানীর অবাক করা সব নাগরিক বৈশিষ্ট বোঝার চেষ্টা করেছিলেন।
এক পান-ভোজন অনুষ্ঠানে ভদ্রলোক তার পর্যবেক্ষণ বর্ণনাকালে এখানকার নাগরিক সমাজের পায়ে হাঁটার ভঙ্গি নিজেই নকল করে দেখিয়েছিলেন। চলতি পথে ভীড়ের ভেতর কেমন করে সেঁধিয়ে গিয়ে মোচড় মেরে বেরিয়ে আসতে হয়; রানিং ট্রাফিকের ভেতর প্যাঁকাল মাছের মত এঁকেবেঁকে রাস্তা পারাপারের দর্শনীয় আবেগ রচনা করা যায়- তাও দেখিয়েছিলেন পারফেক্টলী। পরে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, তার দেখা মতে বিশ্বের আর কোন জনবহুল নগরে তদীয় ভাষায়- এমন ‘গজেন্দ্রগমন’ নাকি একেবারেই অকল্পনীয়। হায় কপাল, এমন অসাধারণ ঘটনা অবশেষে কি না নজরদারীতে পড়লো এক বিদেশীর! অথচ আমরা তো দেখছি- চলছি ফিরছি নিত্যদিন- নির্বিকারভাবে।
তো, আলোচনা হচ্ছিল গতির কথা নিয়ে। প্রায় দুই-আড়াই কোটি আদম সন্তান পরম মমতায় গর্ভে ধারণ করেছেন যে কংক্রিটের নগরী ঢাকা; তার বিপুল জনগোষ্ঠির বৃহৎ এক অংশ প্রাণ বাঁচানোর ফরজ আদায়ে কোন না কোনভাবে কর্মব্যস্ত সময় কাটান প্রতিদিন। কর্মের প্রয়োজনে তাদের ছুটতে হয় এক স্থান থেকে অন্যত্র। এই ছোটাছুটির নিত্য-কর্মে পাগলপারা ব্যস্ত মানুষগুলোর চলার পথের অবস্থাটা কেমন?
রাজধানীর রাজপথ ঘেঁষে নির্মিত যে নিতান্তই সরু পায়ে চলার ফুটপাত সেখানে দখলীস্বত্ত্ব কায়েম করেছেন স্বল্পপুঁজির ব্যবসায়ী ভাইজানেরা। না, ওখানে তারা একা নন; এই ফুটপাত বাণিজ্যের আয়-বরকত যেন কোনও ভাবে বেহাত হতে না পারে তজ্জনিত দায়বদ্ধতা পরিলক্ষণে আছেন রাজনীতির লেবেলধারী আরও একদল বড় ভাই। এই সুমহান দায়িত্ব তারা নিতান্তই জনসেবার নামে স্বেচ্ছায় আপন এখতিয়ারে প্রতিপালন করে আসছেন। ফুটপাত জবরদখলকারী এই রথি-মহারথিদের সম্মিলিত কর্মযজ্ঞের বেপরোয়া তান্ডবে বেচারা পায়ে হাঁটা নগরবাসী অবশেষে নেমে পড়তে বাধ্য হচ্ছেন গাড়ী চলার রাস্তায় এবং বলাবাহুল্য, বেঘোরে প্রাণত্যাগ- নিদেনপক্ষে পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে ফিরছেন আপন ডেরায়।
বেচারা কর্মজীবী নগরবাসীর সন্মুখগতি রুদ্ধকারী ফুটপাত দখলের দূরাচারিতা চলে আসছে বছরের পর বছর। মহামান্য উচ্চ আদালতের একাধিক কঠোর নির্দেশনা সত্ত্বেও এ থেকে নিস্কৃতি মেলেনি নগরবাসীর। আইন চিৎকার করে দাঁত-কপাটি খেলেও তা দেখবার যেন কেউ নেই। সবাই জানেন, এ ক্ষেত্রে ক্ষমতার রাজনীতি সদিচ্ছা জাগ্রত না করলে সুরাহা মিলবে না। কিন্তু সরকার আসে- সরকার যায়; ফুটপাত জবরদখলমুক্ত হয় না আর কোনদিন। বিশ্বের আর কোথাও এমন নজির আছে কিনা সন্দেহ।
এটুকুনই সব নয়। ওই যে জনসেবাধন্য ফুটপাত বাণিজ্য- তার ফাঁক-ফোঁকর গলে তাড়া খাওয়ার গরজে কেউ যে আবার তাড়াতাড়ি একটু আগুয়ান হবেন সে গুড়ে বালি। ওখানে হেলেদুলে পথচলায় মশগুল আছেন যেন চিত্তজয়ের আনন্দে আত্মহারা কিছু নির্বিকারী ভাই বেরাদর! তাদের কনুইয়ের গুঁতো হজম না করে- অনিচ্ছায় অন্যের পায়ে পাড়া না দিয়ে কাজের তাড়ায় ব্যস্ত নাগরিকের এগিয়ে যাবার সুযোগ নেই।
আর রাজপথ! সেখানে তো সমান তালে চলছে দ্রুত গতি-মৃদু গতির যন্ত্রচালিত চারিচক্র এবং মানবচালিত ত্রি-চক্রযান; যেন তারা পরম মমতায় একে অপরের সাথে মিলেমিশে রাজপথে আছে। যন্ত্রচালিত বাহনগুলো চলছে যেন মানবচালিত রিকশার পাহারায়; গতির সামর্থ্য থাকলেও এগিয়ে যাবার সুযোগ নেই তার; সামনে-পেছনে প্রায় গতিহীন রিকশার মিছিল।
এক্ষেত্রে আপনি হয়তো বলতে পারেন, রিকশা তুলে দিলেই তো হয়। স র্ব না শ- এও কি সম্ভব! রিকশা হলো ঢাকা নগরীর ঐতিহাসিক নিদর্শন। একদা ইরানী এক প্রেসিডেন্ট যার নামটা খেয়াল নেই- এদেশ সফরে এসে রিকশা দর্শনে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তিনি বুলেট প্রুফ গাড়ী ফেলে আমাদের সিনেমার তৎকালীন বিখ্যাত নায়িকা শাবানা-ববিতার লাস্যময়ী র্পোট্রেইট আঁকা অদ্ভূতদর্শণ ত্রি-চক্রযানে নগর ভ্রমন করেছিলেন। শুধু কি তাই, যাবার সময় তিনি একটি সুসজ্জিত তিন চাকার রিকশা বডিতে অঙ্কিত নায়িকাদের আবেগ জাগানিয়া সিন-সিনারীসহ প্লেনে চড়িয়ে ইরান সফরেও নিয়েছিলেন। এও কি কম কথা!
এবার বুঝুন- রিকশার মত এমন ঐতিহ্যবাহী পরিবেশবান্ধব বাহন দুনিয়ায় আর আছে কি একটিও! গরীব-দুঃখী লাখো মানুষের জীবন-জীবিকা বাঁধা পড়ে আছে এই যাদুকরী বাহনের প্যাডেলে। তাকে বিতাড়ন? মাই গড! এই রিকশা তুলে দিলে লাখো ‘প্রলেতারিয়েত’ ভাইয়ের তাহলে খাওয়া-পরার কি ব্যবস্থা হবে? অতএব, গতির যুক্তি মুর্দাবাদ!
কথা আরও আছে। নাগরিক সমাজের সড়ক পারাপার নিরাপদ করতে নগর জুড়ে নির্মিত যে অসংখ্য ফুটওভার ব্রিজ, সেখানে আরোহন মনে হয় বড় কষ্টের কাজ। তারচে বরং সহজ সমাধান ‘যায় যাবে প্রাণ- রাখিব দেশের মান’ জাতীয় উদ্দীপনামূলক গানের কলি মনে মনে আউড়ে চলন্ত ট্রাফিকের ভেতর প্রথমত. এলোপাথাড়ি ঝাঁপিয়ে পড়া; অতঃপর নানা ‘অ্যাক্রোব্যাটিক মুদ্রা’ দেখিয়ে প্রাণ হাতে করে হলেও রাস্তা পারাপার হওয়াটাই যেন এই নগরবাসী মহা-বীরত্বের কাজ বিবেচনা করেছেন।
এতে হামেশাই ঘটছে প্রাণঘাতি দুর্ঘটনা। ঘটুক, তাতে কি? আমরা না স্বাধীন জাতি? মহান স্বাধীনতার গৌরবজ্জ্বল গরিমা জগৎ-সংসারে বহমান রাখতে সামান্য দু’একটা দুর্ঘটনা অথবা প্রাণহানী তো নস্যি! হ্যাঁ, এভাবে- এবং এইভাবে আমাদের গণতন্ত্র বাবাজি বলতে গেলে সার্থকভাবেই পৌঁছে গেছেন একেবারে জনগণের দোরগোড়ায়।
কথা হচ্ছে- এমন কেন হলো। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী কড়া নাড়ছে আমাদের দুয়ারে। সুদীর্ঘ এ সময়টিতে আমাদের রাজধানী নগরী কেমন করে নগরবাসীর জন্য নিরাপদ-বাসযোগ্য রাখা যাবে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষাই যেন শেষ করা গেল না। এই নগরে আমাদের চলাচল, রাজপথ-ফুটপাত, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কেমন করে সুশৃঙ্খল ও নিবিঘ্ন রাখা হবে সেটাই সুনির্দিষ্ট হলো না। প্রতিদিনের অসহনীয় যানজট কেড়ে নিচ্ছে মানুষের মূল্যবান কর্মঘন্টা এবং ধসিয়ে দিচ্ছে জাতীয় অর্থনীতি। রাজপথে বেপরোয়া যন্ত্রদানব যেন নিয়ম করেই হরণ করছে নগরবাসীর জীবন। তা নিয়ে কিছুদিন হৈচৈ অতঃপর সব শুমসাম। এর সাথে পরিবেশ দূষণ যে কোন মাত্রায় গিয়ে ঠেকেছে তা এখন চোখ রাঙিয়ে- চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাচ্ছেন ‘মিজ করোনা’ উপলক্ষে সংবেদনশীল দয়ালু প্রকৃতি; দেখাচ্ছেন উচ্ছৃঙ্খল-বিশৃঙ্খল গতিহীন গড্ডালিকা প্রবাহের মজেজা।
ভাল কথা; করোনা মহামারি সাক্ষী রেখে ব্যাপারটা খোলাসা করায় সুবিধা আছে। এই রাজধানী ঢাকার চারপাশ বেষ্টন করে আছে প্রকৃতির অনুপম আশির্বাদ যে চার-চারটি মিষ্টিপানির প্রবাহমান নদী; প্রকৃতির এমন আশির্বাদ পৃথিবীর আর কোন রাজধানী শহরের ভাগ্যে জোটেনি। অথচ এমন দুষ্প্রাপ্য সম্পদ আমরা বিনষ্ট করছি চরম অবজ্ঞায়। প্রতিদিন আমরা টনকে টন ক্ষতিকর ধুলো খাওয়াচ্ছি রাজধানীর বিলুপ্তপ্রায় গাছগুলোকে; ধুলোর আস্তরণে মৃতপ্রায় গাছেরা হাঁসফাঁস করে বাঁচার আকুতি জানালেও আমরা ‘টনক নড়ানোর টনিক’ হারিয়েছি। প্রকৃতি-বিধংসী অত্যাচারী মানুষ করোনা হামলায় ঘরে আটক আছেন বলেই না উৎফুল্ল নদী আর গাছগাছালি এখন কথা কইছে আরম্ভ করেছে।
কোথায় যেন শুনেছি, গোটা বাংলাদেশ নাকি একটা গ্রাম। তাহলে কি আমাদের চেতনার গভীরে অবচেতনভাবে অস্তিত্ববান রয়েই গেছে গতিহীন নিস্তরঙ্গ গ্রামীন জীবনের অবশেষ? না হলে খোদ রাজধানী- যেখানে গতিই হওয়ার কথা জীবন, সেখানে বাস করে কিভাবে গতিহীনতার চক্রাবর্তে আমরা নির্বিকার দিন কাটাতে পারছি? এ অবস্থা খতিয়ে দেখতে সমাজ বিজ্ঞানীরা কাজ করতে পারেন। তবে উপস্থিত ক্ষেত্রে অন্তত এটুকুন বলা অত্যুক্তি হবে না যে, সমস্যা রয়ে গেছে আমাদের চেতনাগত চরিত্রের ভেতর; রয়ে গেছে জাতীয় মেধায় মননে- গোটা অস্থি মজ্জায়।
সেনা নিবাসের অভ্যন্তরে যে গাড়ী চালক বা পথচারী ট্রাফিক আইন এবং জনশৃঙ্খলা মেনে চলেন নির্দ্বিধায়, তারাই আবার অন্যত্র তা উপেক্ষা করেন কেন? এ তো সাদা চোখেই দারুণ এক ‘বুট থেরাপী’র জাজ¦ল্যমান নমুনা- যে কারণে ওই সংরক্ষিত এলাকায় আইন ভাঙতে সবাই অনিচ্ছুক। আর বাইরে এলেই গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার অপার মহিমা উপভোগের জাতিগত বেপরোয়া আবেগ যেন আত্মপ্রকাশের তীব্র বেদনায় ফেটে পড়তে চায়। এই নিন্দনীয় উপসর্গ একটি অদম্য সৃষ্টিশীল স্বাধীন জাতির জন্য একেবারেই বেমানান। আমাদেরই ভাঙতে হবে এই অক্ষমতার নিগড়। পেছনে না তাকিয়ে শিখতে হবে গতির সাথে পথ চলার তরিকা। গণতন্ত্র কাউকে আর যাই হোক- উচ্ছৃঙ্খল-বেপরোয়া হতে শেখায় না। বাংলাদেশ অমর হোক; সোনার বাংলা কায়েম হোক। বিজয়ী হোক বাংলাদেশের অবদমিত মানুষজন।