কাছাকাছি চলে এসেছে ‘আম্পান’, উদ্ধার তৎপরতায় ৮ যুদ্ধ জাহাজ প্রস্তুত
19, May, 2020, 10:23:45:PM
স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট: সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ বাংলাদেশের আরও কাছাকাছি চলে এসেছে। মোংলা বন্দরের জেটি ও বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত সব জাহাজকে বন্দরের মূল পশুর চ্যানেল থেকে সরিয়ে নিরাপদে রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের ৮টি যুদ্ধ জাহাজকে প্রস্তুত করে বন্দরে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আম্পানের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আগামীকাল বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে এটি বাংলাদেশের ওপর আছড়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ‘আম্পান’ চট্টগ্রাম ও খুলনা উপকূলের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করবে। তবে, ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের দীঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝামাঝি সুন্দরবন ও আশপাশের এলাকা দিয়ে এটি অতিক্রম করবে।
আম্পানের বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় প্রায় ২৫ কিলোমিটার কমেছে। তবে এখনও এটি সুপার সাইক্লোন রূপেই রয়েছে। এটিকে কোনভাবেই হালকাভাবে দেখার সুযোগ এখনও হয়নি। আবহাওয়া অধিদফতর বলেছে, সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, এখনও আমরা বন্দরগুলোকে বিপদ সংকেত দেখাতে বলছি। বুধবার মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হবে।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত আম্পান উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ২২ মে অমাবস্যা থাকায় এর প্রভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠবে জোয়ার। ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং আশপাশের দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলার বিষয়ে বলেন, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব এলার্ট থ্রি জারি করে বন্দরের জেটি ও বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত ১১টি বিদেশী জাহাজের পণ্য খালাস ও বোঝাই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব নৌযানগুলো নিরাপদে রাখার পাশাপাশি পশুর চ্যানেলের সকল জাহাজকে বন্দরের মূল পশুর চ্যানেল থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিরাপদে থাকার জন্য বলা হয়েছে। বন্দরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা চালাতে বন্দর জেটিতে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের ৮টি যুদ্ধ জাহাজ অবস্থান নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।