স্বাধীন বাংলা ডেস্ক: বিরোধপূর্ণ কালাপানি-লিমপিয়াধুরা-লিপুলেখ এলাকাকে নিজেদের মানচিত্রে প্রকাশ করে এ অঞ্চলকে যেকোনও মূল্যে ভারতে কব্জা থেকে ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি অলি। আজ সংসদে এই ম্যাপ সংসদে প্রকাশের পর ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন। তাঁর এ বক্তব্যে ভারত বিস্মিত হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে প্রকাশ করা হয়েছে।

ভারতের দাবিকৃত বিতর্কিত ভূখণ্ডকে নিজ দেশের মানচিত্রে যুক্ত করার পর ভারতকে কড়া ভাষায় কটাক্ষ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি অলি। একই সঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে নেপালে করোনভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, চীন এবং ইতালীর ভাইরাসের চেয়ে ভারতীয় ভাইরাস ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতী।

প্রতিবেশি এ দুই দেশের অমীমাংসিত ভূখণ্ড কালাপানিতে ভারতের একটি সড়ক নির্মাণ ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনা দেখা দেয়। একদিন আগে নেপালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে কালাপানিকে নিজ দেশের ভূখণ্ড হিসেবে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।

বিরোধপূর্ণ ও বিতর্কিত কালাপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধাউরা নেপাল-ভারত-চীনের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ফলে এ জায়গাকে অত্যন্ত কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। নেপালের উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত এ ভূখন্ড- যার দক্ষিণে ভারতের কুমায়ুন এবং উত্তরে চীনের তিব্বত।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন থেকে এ বিরোধপূর্ণ জায়গা নিয়ে ভারত-নেপালের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচান চলছে। এক পর্যায়ে দেশ দু’টির প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে যে সীমান্তের এসব সমস্যা সচিবদের বৈঠকে সমাধান করা হবে। তবে, কার্যত সচিবদের মধ্যে এরকম কোন বৈঠকই হয়নি। এরই মধ্যে বিতর্কিত স্থান দু’টিকে ভারত তার নিজেদের অংশ দেখিয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করে। পরবর্তীতে,  গত ৮ মার্চ ভারতীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডের পিথাউরাগড়-লিপুলেখের মধ্যে একটি লিংক রোডের উদ্বোধন করেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তখন নেপাল কাঠমান্ডুতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তাদের আপত্তির বিষয়টি উল্লেখ করে একটি কূটনৈতিক নোট দেয়। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে বলেছে, তারা নিজেদের ভূখণ্ডেই সড়কটি নির্মাণ করছে।

এরই প্রেক্ষিতে নেপাল সরকার নিজেদের অবস্থান জানান দিতে গিয়ে বিরোধপূর্ণ জায়গা নিজেদের দাবি করে মানচিত্র প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী খাটিওয়াদা বলেন, নতুন এই মানচিত্র স্কুল-কলেজের বইপত্রে, সরকারি প্রতীকে এবং অফিস-আদালতের সব কাগজপত্রে এখন থেকেই ব্যবহার করা হবে। ভূমি ব্যবস্থাপনা সমবায় এবং দারিদ্র বিমোচন বিষয়ক মন্ত্রী পদ্মা আরিয়াল নতুন এই মানচিত্রের প্রস্তাব করেন এবং মন্ত্রিসভা এ ব্যাপারে তাদের সম্মতি দিয়েছে।