৩০তম স্প্যানে দৃশ্যমান পদ্মাসেতুর সাড়ে ৪ কিলোমিটার
30, May, 2020, 11:49:9:AM
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও থেমে নেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ। সকল প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। এর ফলে পদ্মা সেতুর ৪ হাজার ৫০০ মিটার দৃশ্যমান হলো।
২৯তম স্প্যান বসানোর ২৬ দিনের মাথায় ৩০তম স্প্যানটি বসানো সম্ভব হয়েছে। আরও ১১টি স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে বাকি ১ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার সেতু দৃশ্যমান হবে। এরপরই ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল থেকে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার এ স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে।
শনিবার ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ২৬ ও ২৭ নম্বর পিলারে স্প্যান বসানো শেষ হয়। এই দুইটি পিলার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে পড়েছে।
এর আগে, শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটি মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ভাসমান ক্রেন বহন করে রওনা দেয়। নির্ধারিত পিলারের কাছে পৌঁছায় দুপুর ১টার দিকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুতে বসানোর জন্য আরও পাঁচটি স্প্যান প্রস্তুত আছে। এর মধ্যে দুটিতে রং করার কাজ চলছে। মূল সেতুর কাজ এগিয়েছে ৮৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগামী বছরের জুনে পদ্মাসেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে কাজ বন্ধ হয়নি পদ্মাসেতুর। কিন্তু গতি কমেছিল। করোনার প্রভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সব স্প্যান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশে না আসায় কাজ বেশি বিলম্ব হচ্ছে। এ বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে চীন থেকে যে দু’টি স্প্যান দেশে আসার কথা ছিল, সেগুলো এখনো আসেনি। চীনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় শেষ চালান পথিমধ্যে।
এদিকে, এবারের ঈদে কোনো শ্রমিক ও প্রকৌশলী ছুটি নেননি। সেতুর কাজের গতিকে সচল রাখতে কর্মস্থলে থেকেছেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এক মাসের বেশি সময় ধরে তারা সেতু প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করছেন, যেখানে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি দ্বিতল হবে। যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক পিলার থেকে আরেক পিলারের দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
৪২টি পিলারের ওপর মোট ৪১টি স্প্যান জোড়া দেয়া সম্পন্ন হলে পদ্মা সেতু পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদী শাসনের কাজ করছে চীনের সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড।