রাজশাহী ব্যুরো : চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর। বুধবার ১১টা ৫০ মিনিটে রাজশাহীর কালেক্টরেট মাঠের পাশে খ্রিষ্টান কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে সমাহিত করা হয়।
প্রিয় শিল্পীর শেষ বিদায়ে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী ২ আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, এন্ড্রু কিশোরের স্ত্রী লিপিকা, পুত্র জয় এন্ড্রু সপ্তক, কন্যা মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা, বোন-ভগ্নিপতিসহ নিকট আত্মীয়রা। এছাড়া সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
করোনা প্রকোপের কারণে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়নি এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ। একই কারণে রাজধানী থেকে সংগীতাঙ্গনের তেমন কেউ-ই যেতে পারেননি এই শিল্পীর শেষযাত্রায়। তবে শেষ বিদায় জানাতে ঢাকা থেকে এসেছিলেন জনপ্রিয় সুরকার ইথুন বাবু, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান প্রমুখ।
এর আগে রাজশাহীর স্থানীয় চার্চে বুধবার সকাল ৯টায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে নিয়ে আসা হয় এন্ড্রু কিশোরকে। সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত গির্জার মধ্যে রাখা হয় তাকে। এরপর প্রিয় গায়কের পরিবার পরিজন ছেলে মেয়েদের নিয়ে প্রর্থানা করেন ফাদার।
প্রার্থনা শেষে সাধারণের শ্রদ্ধা জানাতে চার্চের সামনে রাখা হয় মরদেহ। এখানে সবাই ফুলে ফুলে সিক্ত করেন এন্ড্রু কিশোরকে। চার্চের আয়োজন শেষ হলে এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ নিয়ে আসা হয় রাজশাহীর কালেক্টরেট মাঠের পাশে খ্রিষ্টানদের কবরস্থানে। সেখানে বাবা-মায়ের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় যান এদেশের প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর।
সবাইকে কাঁদিয়ে ৬ জুলাই না ফেরার দেশে চলে গেছেন গানের মহারাজ। ছেলে মেয়ে সপ্তক ও সঙ্গা অস্ট্রেলিয়াতে থাকায় ৯ দিন পর কবর দেওয়া হলো এন্ড্রু কিশোরকে।
কিডনি ও হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন এন্ড্রু কিশোর। এছাড়া ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন এ শিল্পী। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুর যান তিনি। দীর্ঘ নয় মাস পর গত ১১ জুন দেশে ফেরেন।
রাজশাহীতে জন্ম এন্ড্রু কিশোরের। সেখানেই কেটেছে শৈশব ও কৈশোর। রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে সংগীতের প্রাথমিক পাঠ শুরু করেন। এক সময় গানের টানে ছুটে আসেন রাজধানী ঢাকায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন তিনি।
সংগীত ক্যারিয়ারে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। তার গাওয়া প্রথম চলচ্চিত্রের গান ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’। ১৯৭৭ সালে গানটি ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়। এর পরে এ শিল্পীকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।