ড. রাশিদ আসকারী। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইতিহাসে এক অনন্য নাম। বিভিন্ন সমস্যায় যখন জর্জরিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পেলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর এপর্যন্ত কোন উপাচার্যই তার মেয়াদ পূর্ণ করতে সক্ষম হয়নি। দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ তম উপাচার্য হিসেবে একমাত্র তিনিই আগামী ২১ আগস্ট মেয়াদপূর্ণ করতে যাচ্ছেন। উপাচার্যে অধিষ্ঠিত হওয়ার এ দীর্ঘ চার বছরের মধ্যে সেশনজটমুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ঢেলে সাজিয়েছেন নবরূপে।
এছাড়াও অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকীকরণের পথে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। উপাচার্য হিসেবে তার দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলী, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মতামত তুলে ধরেছেন-মো: রিয়াদ।
শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, বর্তমান প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভুতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেশন জট দূর করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। এই চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয় কখনও অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে বন্ধ হয়নি। অবকাঠামোগত, একাডেমিক ও প্রশাসনিক উন্নয়নের পাশাপাশি বর্তমান উপাচার্য শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মানিসিক উন্নয়নেও গুরুত্ব দিয়েছেন। নিয়মিত বিভিন্ন কালচারাল প্রোগ্রামের আয়োজন, শিক্ষার্থীদের এক্সট্রা কারিকুলাম একটিভিটিসের উপর গুরুত্ব প্রদান ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারের ব্যবস্থা করেছেন। ক্যাম্পাসকে সাজিয়েছেন নতুন করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি ভাস্কর্য মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরাল স্থাপন, লেকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, বোটানিক্যাল গার্ডেনের উদ্বোধন ও জমকালো ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন বর্তমান প্রশাসনের মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছে। এমনকি ইবির ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বাজেটও পেশ হয়েছে এই প্রশাসনের আমলে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসনে বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতির পিছনে ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারীর অবদান অতুলনীয়। উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক, অবকাঠামোগত ও ভাবমূর্তিগত উন্নয়নে তিনি নিরলস ভাবে কাজ করে গেছেন। মানুষ হিসেবে ভুল থাকাটাই স্বাভাবিক । মানুষ সবকাজেই শতভাগ সফলতা অর্জন করতে পারে না। কিছু ত্রুটি বিচ্চুতি থাকা সত্ত্বেও তার পজিটিভ দিকটাই বেশি ছিলো।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. রুহুল কুদ্দুস সালেহ বলেন, ইতঃপূর্বে যে সকল প্রশাসন ক্ষমতায় ছিল তার মধ্যে বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেওয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলার প্রবর্তন করে সততার সাথে বর্তমান উপাচার্য তার মেয়াদ পুরণ করতে যাচ্ছেন। নতুন ডায়েরী প্রবর্তন, সেমিস্টার পদ্ধতি চালু, সেশন জট দূরীকরণ ও ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে পরিবেশকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বর্তমান উপাচার্য অত্যন্ত দক্ষভাবে কাজ করেছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও কনসট্রাকশনের কাজ চলমান। এ কাজগুলো সমাপ্তির দিকে এগিয়ে নিতে ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এই প্রশাসনকে যেন সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে আসার সুযোগ দেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সহায়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি আব্রাহাম লিংকন বলেন, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারীর চার বছর অতিক্রম কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। নিরলস এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে তিনি প্রশাসনিক, অ্যাকাডেমিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকীকরণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তার মেধা ও যোগ্যতার বলেই। তার মত নিরলস পরিশ্রমী একজন মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে পুণরায় আসলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক বেশি মঙ্গলকর হবে।
অফিসার্স এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন খান বলেন, অধাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী অত্যন্ত সুদক্ষ নেতৃত্বের অধিকারী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ তম উপাচার্য হিসেবে একমাত্র তিনিই মেয়াদ পুরণ করতে যাচ্ছেন। আমাদেরে একটি সুন্দর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুসজ্জিত ক্যাম্পাস উপহার দিয়েছেন। যা ইতঃপূর্বে কোন উপাচার্য উদ্যেগই নেয়নি। বর্তমান প্রশাসনের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের মধ্যে সমন্বয়তার কোন ঘাটতি ছিলো না। তারা নির্ভীকভাবে স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমূল পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে।