স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট:অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম ওরফে পাপুল কুয়েতে ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’ বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা ইসলাম। আজ বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সেলিনা ইসলাম এসব তথ্য জানান।
অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে সেলিনা ইসলাম ও তার বোন জেসমিনকে সকাল ১০ থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন।
সাংবাদিকদের সেলিনা ইসলাম বলেন, ‘কুয়েতে পাপুলের প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করে। ওই প্রতিষ্ঠানের একটি পক্ষের যড়যন্ত্রের কারণে সেদেশে তিনি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। মূলত পাপুল ষড়যন্ত্রে শিকার। আমাদের ভাবমুর্তি নষ্ট করতে এসব করা হচ্ছে’।
অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ সম্পর্কে সেলিনা বলেন, ‘আমরা দুদকে লিখিত বক্তব্য দিয়েছি। আমাদের কোনো গোপন সম্পদ নেই। যা আছে তার বিবরণ দুদককে দিয়েছি। আমরা আইনের পক্ষে। দুদককে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
এরআগে, গত ১২ জুলাই দুজনকে তলব করে নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক কাজী সহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গ্রাহককে লোন বরাদ্দ করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ মানিল্ডারিং করে বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া শত শত কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানে বক্তব্য প্রয়োজনের কথা জানানো হয়।
সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিন ইসলামের নামে কোম্পানি ও এনবিআরের নথিপত্র তলব করা হয়। অন্যদিকে ২১ জুন তাদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব হিসাব স্থগিত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করে চিঠি দেয় দুদক। এরই মধ্যে পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকাকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞায় চিঠি দেয় দুদক।
অর্থ ও মানবপাচার এবং ভিসা বিক্রির অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার পাপুল ও তার কুয়েতি প্রতিষ্ঠানের মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৭ কোটি ৮৮ লাখ ৮৩ টাকা) জব্দের খবর পাওয়া গেছে।
গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পাপুলকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে দেশটিতে মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর পাপুলকে আদালতে হাজির করলে জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠান আদালত।