ক্রীড়া ডেস্ক : উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে একের পর এক বিস্ময়ের জন্ম দেওয়া লাইপজিগের পথচলা শেষ হলো। জার্মানির দলটিকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠলো পেরিস সেন্ট জার্মেই-পিএসজি। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় শুরু হওয়া ম্যাচটিতে লিপজিগের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতে ফাইনালে উঠে নেইমার-এমবাপ্পেরা।
এরআগে চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা সাত মৌসুম নক আউট পর্ব থেকে বিদায়। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে প্রথম চারবার, পরের তিনবার দ্বিতীয় রাউন্ড। এই সময়ে ফ্রান্সের সিংহাসনে গেঁড়ে বসেছে প্যারিসিয়ানরা। কিন্তু আলোচনা-সমালোচনা আর বিতর্ক সঙ্গী করে পিএসজি এতোদিন ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপার স্বাদ নিতে ফাইনাল অবধি পৌঁছাতে পারেনি। সেই খরা কাটলো এবার। ক্লাব প্রতিষ্ঠার পঞ্চাশতম বর্ষে এসে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে খেলার সুযোগ পেল তারা।
লিসবনে গোটা ম্যাচে দাপট দেখিয়েছে পিএসজি। প্রথমবার দুই দল কোনও প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হয়েছিল। অচেনা প্রতিপক্ষের এই লড়াইয়ে মোটেও পাত্তা পায়নি লাইপজিগ। ষষ্ঠ মিনিটে দুর্দান্ত সুযোগ নষ্ট হয় নেইমারের। কিলিয়ান এমবাপ্পের পাস থেকে শুধু লাইপজিগ গোলরক্ষক পিটার গুলাকসিকে পেয়েও ব্য্থ হন তিনি। তার শট দূরের পোস্টে আঘাত করে।
পরের মিনিটে জার্মান ক্লাবের জালে বল ঢুকেছিল। কিন্তু নেইমারের হ্যান্ডবলের কারণে গোলদাতার খাতায় নাম লিখতে পারেননি এমবাপ্পে, রেফারি গোল বাতিল করে দেন। তবে স্বস্তির গোলের দেখা পিএসজি পায় ১৩ মিনিটে। আনহেল দি মারিয়ার ফ্রি কিক থেকে মারকুইনহোসের দুর্দান্ত হেডে ১-০ হয় স্কোর।
৩৬ মিনিটে আবারও নেইমার সুযোগ নষ্ট করেন বল পোস্টে আঘাত করলে। বিরতিতে যাওয়ার আগেই পিএসজি ব্যবধান দ্বিগুণ করে। লাইপজিগের গোলকিপার বল ক্লিয়ার করলে নেইমার তা দখল করেন এবং বল বাড়িয়ে দেন ডি মারিয়ার দিকে। আর্জেন্টাইন প্লেমেকার চ্যাম্পিয়নস লিগের মঞ্চে তার ২১তম গোল করতে ভুল করেননি।
বিরতির পর বেশ খানিকটা সময় পিএসজির রক্ষণে চাপ ধরে রাখে মাত্র ১১ বছর আগে ফুটবলে পথচলা শুরু করা লাইপজিগ। সুযোগও পেয়েছিল তারা, কিন্তু সাফল্য মেলেনি। প্রতিপক্ষকেও পারেনি আটকে রাখতে।
৫৬তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে ফাইনালের পথে অনেকখানি এগিয়ে যায় পিএসজি। বাঁ দিক থেকে আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ডি মারিয়ার ক্রসে হেডে গোলটি করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হুয়ান বের্নাত।
তিন গোলে পিছিয়ে পড়লেও হতাশায় ভেঙে পড়েনি লাইপজিগ। বলতে গেলে সমান তালেই আক্রমণ করতে থাকে তারা। ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় যদিও নিশ্চিত সুযোগ খুব একটা তৈরি করতে পারেনি দলটি।
এদিক থেকে বেশ এগিয়ে ছিল পিএসজি। দুই মিনিটের ব্যবধানে ভালো দুটি সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন এমবাপ্পে। শেষ ১০ মিনিটে আবারও নেইমার ও মার্কো ভেরাত্তি একটি করে সুযোগ নষ্ট করায় ব্যবধান বাড়েনি। শেষ পর্যন্ত তিন গোলের ব্যবধানে জয়ে ফাইনালের টিকিট নিয়ে মাঠ ছাড়ে নেইমার-এমবাপ্পেরা।
আজ রাত ১ টায় দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে মুখোমুখি হবে বায়ার্ন মিউনিখ ও অলিম্পিক লিওঁ। এই ম্যাচের বিজয়ী দলের বিপক্ষে আগামী রোববার শিরোপা লড়াইয়ে নামবে টমাস টুখেলের দল।