বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রধান কুশীলব মোশতাক, প্রধান সহযোগী জিয়া: তথ্যমন্ত্রী
26, August, 2020, 8:26:45:PM
স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট: তথ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছন মাহমুদ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রধান কুশীলব খন্দকার মোশতাক আর তার প্রধান সহযোগী হচ্ছে জিয়াউর রহমান। তাই আজকে দাবি উঠেছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে, কিন্তু এ হত্যাকান্ডের নেপথ্য কুশীলবদের- তো বিচার হয় নাই। জিয়াউর রহমানসহ যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পটভূমি রচনা করেছেন, তাদের মুখোশ উন্মোচন করা দরকার আর কুশীলবদের মধ্যে যারা এখনো বেঁচে আছেন, তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো দরকার। ইতিহাসের স্বার্থেই তা প্রয়োজন।’
বক্তব্যের শুরুতে ১৫ আগস্ট এবং ২১ আগস্ট শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ায় জেনারেল জিয়ার মতো বেগম খালেদা জিয়াও অপরাধী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষ্যে প্রগতিশীল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ-ভাসানী) আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বক্তব্যের শুরুতই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে গভীর শ্রদ্ধা করতেন উল্লেখ করে এসময় তিনি মওলানা ভাসানীর প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি এ সময়, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের কুশীলব জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলেন, আমি মনে করি এবং বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য জিয়াউর রহমান যেমন অপরাধী, তেমনি বেগম খালেদা জিয়াও সেই অপরাধে অপরাধী।’
‘বেগম জিয়া ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাতানো নির্বাচন করার পর বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী কর্নেল (অব.) আব্দুর রশীদকে বিরোধী দলীয় নেতা বানিয়ে তার গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে দিয়েছিলেন, মন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছিলেন। এতো বছর পরে বলা নাই কওয়া নাই বেগম খালেদা জিয়া হঠাৎ করে ১৯৯৫ সালে ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করলেন, তারপর থেকে কেক কাটা শুরু করলেন। এগুলো ফৌজদারি অপরাধ। এই অপরাধে বেগম খালেদা জিয়াও অপরাধী।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে গভীর শ্রদ্ধা করতেন উল্লেখ করে এসময় তিনি মওলানা ভাসানীর প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান।
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গভীর শ্রদ্ধা করতেন উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, প্রগতিশীলদের মধ্যে যখনই অনৈক্য তৈরি হয়, তখনই প্রতিক্রিয়াশীলরা সুযোগ করে নেয়। ১৯৭৫ সালে এভাবেই প্রতিক্রিয়াশীলরা সুযোগ করে নিয়েছিল। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে প্রগতিশীলদের অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়াশীলরা ক্ষমতা দখল করেছে, ছোবল মেরেছে।
তিনি বলেন, ‘আস্ফালনকারী প্রতিক্রিয়াশীলদের দমন করার লক্ষ্যেই আজকে প্রয়োজন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের সব-শক্তি ও প্রগতিশীলদের ঐক্য। স্বাধীনতার প্রশ্নে, অসাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সার্থে যে মূলমন্ত্রের ভিত্তিতে আমাদের পূর্বসূরিরা দেশ রচনা করে গেছেন, স্বাধীনতার সেই মূলভিত্তিগুলোকে সংরক্ষণ করার জন্য আমাদের মধ্যে অবশ্যই ঐক্য দরকার।’
প্রগতিশীল ন্যাপের (ভাসানী) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও প্রধান সমন্বয়কারী মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর দৌহিত্র পরশ ভাসানীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ও ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালু।
এ ছাড়াও প্রগতিশীল ন্যাপের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল আহমেদ, মনিরুল হাসান মনির, মোহাম্মদ আলী, কিশমত, মৌসুমী দেওয়ান প্রমুখ এ সভায় বক্তৃতা করেন।