বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার দায়ে চাকরি হারালেন ঢাবির অধ্যাপক
9, September, 2020, 9:09:4:PM
স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা করে ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শীর্ষক প্রবন্ধ লেখায় চাকরি হারিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান।
আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঢাবি’র নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, অধ্যাপক ড. এস এম মাকসুদ কামাল, অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম, শামসুজ্জামান খান, বাহারুল মজনুন চুন্নু প্রমুখ।
সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য বলেন, সভায় বঙ্গবন্ধু ও সংবিধান অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি দুই প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ (প্রশাসন) ও অধ্যাপক ড. এস এম মাকসুদ কামালের (শিক্ষা) মধ্যে সামাদকে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অব্যাহতির কারণ: অব্যাহতি প্রাপ্ত অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ একটি পত্রিকার স্বাধীনতা দিবস সংখ্যায় ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লেখেন। প্রবন্ধে তিনি লেখেন, ‘আওয়ামী নেতাদের বেশিরভাগই স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তাদের পরিবার-পরিজনসহ ভারতে চলে গেলেন এ দেশবাসীকে মৃত্যু ফাঁদে ফেলে দিয়ে নেতৃত্বহীন অবস্থায়। যাকে ঘিরে এ দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখত সেই শেখ মুজিবুর রহমানও। জাতির এ সঙ্কটকালীন মুহূর্তে ত্রাতারূপে আবির্ভূত হন তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান। দেশপ্রেমের মহান মন্ত্রে উজ্জীবিত এই টগবগে যুবকের কণ্ঠে ২৬ মার্চ রাতে বজ্রের মতো গর্জে ওঠে স্বাধীনতার ঘোষণা। স্বাধীনতার ডাক এসেছিল শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর, তার আগে নয়। আমার জানা মতে, তিনি কোনো স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি।’
অধ্যাপক মোর্শেদের প্রবন্ধ প্রকাশের পর তাতে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের অভিযোগ আনে ছাত্রলীগ। পরে সময় অধ্যাপক মোর্শেদকে বরখাস্ত করার দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও ওই লেখার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়ে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
ওই কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হলে মোর্শেদ হাসান খানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে আইনি সুপারিশ করতে গত বছর ৩০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে দায়িত্ব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এই ট্রাইব্যুনালের সুপারিশের ভিত্তিতেই আজ তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হল।