স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট: গতশুক্রবার রাতে এশার নামাজের সময় নারায়ণগঞ্জের মসজিদে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে এ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩১ জনে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। সর্বশেষ মারা যাওয়া ২ মুসল্লি হলেন- নজরুল ইসলাম ও শেখ ফরিদ। এর আগে আজ সকালে আব্দুস ছাত্তার (৪০) নামের আরও একজনের মৃত্যু হয়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক পার্থ সংকর পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে এশার নামাজের সময় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তুল্লা এলাকার ওই মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আগুন আর ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় পুরো মসজিদ এলাকা। প্রায় ৫০ জন মুসল্লি দগ্ধ হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩৮ জনকে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরের দিন শনিবার বার্ন হাসপাতালের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, চিকিৎসাধীন সকলের অবস্থাই শঙ্কটাপন্ন।
এখন পর্যন্ত বার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মামুন নামে একজনকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাকি ৩৭ জনের মধ্যে ৩১জন মুসল্লির নির্মম মৃত্যু হয়েছে।
এলাকাবাসী এ ঘটনায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ এনেছেন। গ্যাস লাইন লিকেজের বিষয়টি মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিলো। কিন্তু তিতাস ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। এ টাকা না দেয়ায় গ্যাস মেরামত করেনি নারায়ণগঞ্জ গ্যাস অফিস।
এ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিস একটি, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ একটি ও জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গত সোমবার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ফতুল্লা অফিসের আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তারা হচ্ছেন- তিতাসের ফতুল্লা অফিসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক মাহমুদুর রহমান রাব্বী, সহকারী প্রকৌশলী এস এম হাসান শাহরিয়ার, সহকারী প্রকৌশলী মানিক মিয়া, সিনিয়র সুপারভাইজার মো. মনিবুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়র উন্নয়নকারী মো. আইউব আলী, সাহায্যকারী মো. হানিফ মিয়া এবং প্রো-কর্মী মো. ইসমাইল প্রধান।