বেলাব(নরসিংদী) প্রতিনিধি:
নরসিংদীর বেলাবতে বিয়ের তিন মাসের মাথায় স্বামী আকরাম হোসেনের পরকীয়ার বলি হলেন স্ত্রী মোছা: আকলিমা আক্তার(১৯)। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হারিসাংগান গ্রামে আকরাম হোসেনের বাড়ীতে। আকরাম ওই গ্রামের বদরুলের ছেলে। এদিকে ঘটনার পর থেকে আকরাম ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।

এ ঘটনায় গত ৮ সেপ্টেম্বর আকলিমার পিতা মুরশিদ মিয়া বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামী করে বেলাব থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনমাস আগে মনোহরদী উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের দাইরাদী গ্রামের মুরশিদ মিয়ার মেয়ে আকলিমা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় হারিসাংগান গ্রামের আকরাম হোসেনের। বিয়ের কিছুদিন পর আকলিমা জানতে পারেন তার স্বামী রিমা নামে প্রতিবেশী এক মহিলার সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এরপর থেকে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দিলে আকলিমার উপর শারীরীক নির্যাতন শুরু হয়। স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ীতে চলে আসে আকলিমা। নির্যাতন করবে না মর্মে কয়েকদিন পর আকলিমার বাবা-মাকে বুঝিয়ে নিজের বাড়ীতে নিয়ে যায় স্বামী আকরাম। সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়েছে অপবাদ দিয়ে পুনরায় তার উপর শারিরীক নির্যাতন করতে থাকে। গত ৫ সেপ্টেম্বর সকালে আকলিমাকে মারধর এবং গালাগাল করে বাড়ী থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়। বিষয়টি মুঠোফোনে সে তার বাবা-মাকে জানালে বিকেলে তাকে আবারো মারধর করেন স্বামী ও শ্বশুর বাড়ীর লোকজন। নির্যাতন সইতে না পেরে ঐদিন বিকালেই ঘরে থাকা কীটনাশক পান করে আকলিমা। পরে আকরামের ছোট ভাই শাকিল সিএনজিযোগে তাকে দাইরাদী বাবার বাড়ীর পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে আকলিমার বাড়ীর লোকজন গিয়ে উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে একদিন পরই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আকলিমার বাবা মুরশিদ মিয়া বলেন, ‘আকরামের পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ার জন্যই আমার মেয়েকে মরতে হয়েছে। আমরা পারিবারিকভাবে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু আকরামকে পরকীয়া প্রেম থেকে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। অবশেষে আমার মেয়েকে জীবন দিতে হলো। আমি এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।’

বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।