ক্রীড়া ডেস্ক : ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে বাছাইপর্বে লড়ছে লাতিন আমেরিকা দেশগুলো। নিজের প্রথম ম্যাচে জিতেছিল ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া ও উরুগুয়ের মতো শক্তিশালী দলগুলো। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় পেয়েছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা।
বলিভিয়ার মাঠে খেলতে গিয়ে জয় নিয়ে ফিরেছে মেসির আর্জেন্টিনা। দু’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা বলিভিয়াকে হারিয়েছে ২-১ গোলে। লা আলবিসেলেস্তেরা বাছাইপর্ব অভিযান শুরু করেছিল লিওনেল মেসির পেনাল্টি থেকে করা একমাত্র গোলে ইকুয়েডরকে হারিয়ে। এবার বলিভিয়ার মাঠ এস্তাদিও হার্নান্দো সাইলেসে গিয়েও কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হয় মেসিদের। অবশ্য মাঠটি ভূ-পৃষ্ঠ থেকে অনেক উুঁচুতে হওয়ায় প্রায় প্রত্যেক দলকে দিতে হয় কঠিন পরীক্ষা। তবে এবার পাশ করে গেছেন মেসিরা। ২০০৫ সালের পর এই প্রথম বলিভিয়ার মাটিতে জিতল আর্জেন্টিনা।
ম্যাচ শুরুর প্রথম আধা ঘন্টা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে আর্জেন্টিনাকে কোণঠাসা করে রেখেছিল বলিভিয়া। ম্যাচের ২৪ মিনিটে এগিয়েও যায় দলটি। আলেহান্দ্রো সাউলের চমৎকার ক্রসে জাল খুঁজে নেন মার্সেলো মার্তিন্স।
তবে গোল হজম করেএকের পর এক আক্রমণ করতে থাকে আর্জেন্টিনা। ৩৯ মিনিটে মেসির দূর থেকে নেয়া বাঁ পায়ের শট পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে চলে যায়। পরের মিনিটেই পারদেসের শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে।
আলবিসেলেস্তেদের এই আক্রমণের সুফল মেলে সৌভাগ্যের এক গোলে। বাঁ দিক থেকে মার্তিনেস বল বাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন ওকাম্পোসের দিকে। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার সেটি ক্লিয়ার করতে গেলে ফের মার্তিনেসের পায়ে লেগে বল জাল খোঁজে নেয়।
আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় গোলটি পায় ৭৯তম মিনিটে। লওতারোর পাস থেকে মেসিদের জয়সূচক গোল এনে দেন বদলি হিসেবে নামা জোয়াকিন কোরেয়া। পিছিয়ে পড়ে আক্রমণে ঝড় তুলে বলিভিয়া। তবে পুরো ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকলেও হার এড়াতে পারেনি সিজার ফারিয়ারেস দল।
শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয়। প্রথম ম্যাচে লিওনেল মেসির দল ১-০ গোলে হারিয়েছিল ইকুয়েডরকে।
অন্যদিকে, নিজেদের মাঠে ব্রাজিলকে ভালোই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল পেরু। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে দুই দফা এগিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু নেইমারের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে জয়ের স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি তাদের। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ব্রাজিল জিতেছে ৪-২ গোলের ব্যবধানে।
প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে তিতের শিষ্যরা। ষষ্ঠ মিনিটে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন আন্দ্রে কারিয়ো। তবে ব্যবধানটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি তারা।
২৮তম মিনিটে নেইমারের সফল স্পট কিকে সমতায় ফেরে ব্রাজিল। ডি-বক্সে পিএসজি ফরোয়ার্ডকে পেরুর মিডফিল্ডার ইয়োতুন জার্সি টেনে ধরে খেলতে বাধা দেওয়ায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর দুই দল অনেক চেষ্টা করলেও প্রথমার্ধে আর কেউ গোল করতে পারেনি। ১-১ গোলের সমতা দিয়েই শেষ হয় প্রধমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে ৫৯তম মিনিটে রেনাতো তাপিয়ার গোলে আবারও পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। এবারও ব্যবধান বেশিক্ষণ ধরে রাখতে দেয়নি পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। রবার্তো ফিরমিনোর পাস থেকে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান রিচার্লিসন। আর ম্যাচের অন্তিম মুহুর্তে জ্বলে ওঠেন নেইমার। ৮৩তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন পিএসজি ফরোয়ার্ড।
উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচটিতে ৮৬তম মিনিটে তাদের কার্লোস চাচেদা এবং ৮৯তম মিনিটে কার্লোস জামব্রানো লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। সেই সুযোগে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন নেইমার। যোগ করা চতুর্থ মিনিটে দলের চতুর্থ গোলটি করেন তিনি। সেই সঙ্গে দুর্দান্ত মাইলফলক গড়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। শেষতক ৪-২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।