পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার পদ্মা নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ নৌকা বালু উত্তোলনের ফলে পাবনা সদর উপজেলার ১০টি গ্রামে ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সে সঙ্গে হুমকির মুখে পড়েছে গোটা এলাকার পরিবেশ। বিভিন্ন শুকনো ও ফসলি জমির মাটি দেবে যেতে দেখা গেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাবনা সদর উপজেলার পদ্মা নদীবেষ্টিত ভাড়ারা ইউনিয়নের পীরপুর, খাসচর, চরভবানীপুর, মাছপাড়া, কণ্ঠগজরা, চরপীরপুর, দড়িভাউডাঙ্গা, নতুনপাড়া, কাথুলিয়া ধোকরাকোল, খাবাসপুর, আশুতোষপুর, চরআশুতোষপুর, সর্দিরাজপুর গ্রামের পদ্মা নদীর অংশ থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। একশ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি সংঘবদ্ধ হয়ে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০ নৌকা পরিমাণ বালু উত্তোলন করছে এবং তা বিক্রি করছে। আশপাশে কোনো বালুমহালও নেই। পুরো প্রক্রিয়াটিই চলছে অবৈধভাবে। এ বিষয়ে পাবনার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। সেখানে বলা হয়েছে, পাবনার ভাড়ারা ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান ও তাঁর ভাই আলতাফ খানের নেতৃত্বে চরের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছেন। এই বালু উত্তোলনে স্থানীয় লোকজন নিষেধ করলে গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে আবু সাঈদ খান ও আলতাফ খানের নেতৃত্বে ২০/২২ জনের একদল সশস্ত্র ব্যক্তি রাত ১২টার দিকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। তার পর থেকে ওই এলাকায় তাঁরা অবাধে বালু উত্তোলন করে চলেছেন। প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ টাকা মূল্যের বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক যুবক জানান, আবু সাঈদ খান ও আলতাফ খান নিজেরা নদীতীরে বসে থেকে বালু উত্তোলনের কাজ তদরকি করেন। এই বালু পাবনাসহ কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও ঢাকায় নৌকায় করে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। পাবনা স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুর রশিদ জানান, নদী থেকে বেশি পরিমাণ বালু উত্তোলন করা হলে নদীর তলদেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে আশপাশে ভূমিধস হতে পারে। ফসলি মাঠে জমি দেবে যেতে পারে। তবে বালু উত্তোলন সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ড. ফারুক আহমেদ। তিনি জানান, নদী ইজারা ছাড়া কেউ বালু উত্তোলন করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ভাড়ারা ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বালু উত্তোলনে তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন তিনি। তবে রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া ও পাবনার কিছু ব্যক্তি বালু উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।