নীলফামারী প্রতিনিধি: টুংরো ও পাতা পোড়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে নীলফামারীর বিভিন্ন এলাকার উঠতি রোপা আমন ক্ষেত। কৃষকের রক্ত ঘাম করা ক্ষেতের ফসলে শীষ বের না হওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কারণ আমন চাষই তাদের জীবিকার একমাত্র ভরসা। আগামী দিনগুলো কীভাবে পার করবে এ দুশ্চিন্তার বলি রেখা তাদের কপালে। অথচ চাষীরা আমন চারা রোপনের পর নিড়ানি দিয়ে ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করেছে। চারাকে সবল সতেজ করতে প্রয়োগ করেছে জৈব ও রাসায়নিক সার। ক্ষেতকে পোকামাকড়মুক্ত রাখতে প্রয়োগ করেছে কীটনাশক। প্রাকৃতিকভাবে পোকা দমনে ক্ষেতে দিয়েছে কঞ্চি। রোপন করেছে ধইঞ্চা। যাতে পাখি বসে অনায়াসে পোকা খেতে পারে। এতে ক্ষেত থাকবে পোকামুক্ত। কিন্তু এতকিছুর পরেও শীষ বের হওয়ার মুহূর্তে ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে টুংরো ও পাতা পোড়া বা পাতা ঝলসানো রোগে। এ ক্ষতি সামাল দিতে তারা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন। নীলফামারীর জলঢাকার খালিশা খুটামারা গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দীন সাত বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছে। তার সাত বিঘা জমির ধান ক্ষেতের পাতা শুকিয়ে গেছে। কিছু কিছু পাতা ধারণ করেছে হলুদ বর্ণ। এসব ক্ষেতের ধানকে বাঁচানোর জন্য ছুটে গেছেন কৃষি বিভাগের উপ-বিভাগীয় কৃষি কর্মকর্তাসহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে। তারা পরামর্শ দিয়েছেন ক্ষেতে পটাশ সার ছিটাতে। তিনি সেটিও করেছেন। দিয়েছেন কীটনাশকও। এরপরেও বাঁচাতে পারেননি ক্ষেত। এ মৌসুমে তিনি এক দানা ধানও ঘরে তুলতে পারবেন না। ওই এলাকার কৃষক আমিনুর রহমানের তিন বিঘা ক্ষেতেরও একই অবস্থা। তিনিও ঘরে তুলতে পারবেন না এক দানা ধান। এই তিন বিঘা জমির ধান দিয়ে চলে তার সারা বছরের খাবার। অন্যের বাড়িতে কাজ করে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া, কাপড় চোপড়, ওষুধসহ বাজার খরচের টাকা জোগান দেন। আগামী এক বছর কী খাবেন এ চিন্তায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মো. ইদ্রিশ জানান, এবারে এক লাখ ১১হাজার একশ ৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। থোড় আসার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্ষেতে কোনো রোগ বালাই ছিল না। হঠাৎ করেই টুংরো ও পাতাপোড়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে পাঁচ হাজার বিঘা আমন ক্ষেতের জমি। এসব ক্ষেতে শীষ বের হবে না। পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য এসব ক্ষেতের নমুনা ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। সরেজমিনে এসব দেখার জন্য সেখান থেকে একটি টিম নীলফামারী আসবেন।