শাবিপ্রবি প্রতিনিধি : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দান তথা এখনকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন- তা একাডেমিক সিলেবাসে অন্তর্ভূক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ‘স্বাধীন বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের ইতিহাস’ শিরোনামে একটি কোর্সের অংশ হিসেবে এ ভাষণ পড়ানো হবে।
গতকাল রোববার অনলাইনে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬০ তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুসারে এবং হাইকোর্টের নির্দেশনায় ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ৭ মার্চের ঐতিহাসিক এই ভাষণকে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণসহ ‘স্বাধীন বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের ইতিহাস’ শিরোনামে একটি কোর্স ডিজাইন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, কোর্সটিতে কি কি অন্তর্ভূক্ত হবে, কত ক্রেডিটের হবে, কিভাবে পড়ানো হবে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা এ কোর্সের আউটলেট ডিজাইন করতে একটি কমিটি করে দিয়েছি। তারা কাজ সম্পন্ন করার পর একাডেমিক কাউন্সিলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ফয়সল আহম্মদকে সভাপতি করে ৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আশফাক হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবু দেলোয়ার হোসেন, শাবির বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আশ্রাফুল করিম, পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. লাইলা আশারাফুন, সমাজকর্ম বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাকামী ৭ কোটি মানুষকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
তার ওই ভাষণের ১৮ দিন পর পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি নিধনে নামলে বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সেই সশস্ত্র সংগ্রামের পর আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
উল্লেখ্য, মুজিববর্ষকে সামনে রেখে এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’কে পাঠ্যসূচির উদ্যোগ নেন শাবি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ইতোমধ্যে জাতির বইটি ‘আত্মজৈবনিক রচনা’ শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের পাঠ্যসূচিতে ২২৬ নম্বর কোর্সের অংশ হিসেবে পড়ানো শুরু হয়েছে।