লাইফস্টাইল ডেস্ক : পেটে চর্বি জমা বা ভুঁড়ি বাড়ার সমস্যা নিয়ে বিব্রত অনেকেই। শুধু তা-ই নয়, পেটে চর্বি জমা সরাসরি হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলন ক্যানসার ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত। শরীরের মধ্যভাগে চর্বি বেশি থাকলে বলা হয় ‘আপেল’ শেপের বডি, যা অতিরিক্ত বিএমআইয়ের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। পেটের চর্বি মূলত ভিসেরাল ফ্যাট। এ থেকে বিপাকক্রিয়ায় নানা জটিলতা ঘটে, রক্তনালিতে ও যকৃতে চর্বি জমে, ইনসুলিন রেসিসট্যান্স হয়।
পেটে চর্বি জমাতে না চাইলে ইনসুলিনের উৎপাদন কমাতে হবে। ইনসুলিন উৎপাদন কমানোর সর্বোত্তম উপায় হলো ডায়েট থেকে কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে ফেলা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাট ও প্রোটিন খাওয়া। এছাড়া দুশ্চিন্তা কমাতে হবে, বেশি করে ঘুমাতে হবে ও প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। পেটের চর্বি কমাতে লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আবশ্যক। পেটের চর্বি কমানোর কিছু কার্যকর উপায় জেনে নিন।
এক. পেটের চর্বি কমানোর উত্তম উপায় হলো প্রোটিন খাওয়া। শরীরে প্রোটিনের কাজ হলো পেশি গঠন করা ও পেশির ঘনত্ব বাড়ানো। পেশির ঘনত্ব যত বাড়বে, শরীর তত বেশি চর্বি পোড়াতে পারবে। সাদা পাউরুটি ও পাস্তার মতো সরল কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে গোটা শস্যের মতো জটিল কার্বোহাইড্রেট, মৌসুমী ফল ও শাক-সবজি খান।
দুই. ভার্জিন কোকোনাট অয়েল বা নারকেল তেল খেলে কোমরের আকার ও পেটের চর্বি কমে। প্রতিদিন ২ টেবিল চামচ ভার্জিন কোকোনাট অয়েল খেতে পারেন।
তিন. মানসিক চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে পেটে চর্বি জমতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ করটিসোল নামক হরমোনের উৎপাদন বাড়ায়। করটিসোল ইনসুলিনের উৎপাদন বাড়ায়। বাড়তি ইনসুলিন ওজন বৃদ্ধি করে, বিশেষ করে পেটে চর্বি জমায়। মানসিক চাপ কমাতে প্রশান্তিদায়ক কাজকর্মে যুক্ত হোন, যেমন- মেডিটেশন, গভীর শ্বাসক্রিয়া, প্রশান্তিদায়ক গোসল ও সবুজ পরিবেশে ঘুরে বেড়ানো। প্রতিদিনকার জীবনযাপনে মানসিক চাপ কমাতে পারলে পেটের চর্বি কমে যাবে।
চার. পেটের চর্বি কমানোর ক্ষেত্রে গ্রিন টি হলো একটি পারফেক্ট ডিটক্স ড্রিংক। কফি পানের অভ্যাস থাকলে এখন থেকে এর পরিবর্তে গ্রিন টি পানের কথা বিবেচনা করতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ওজন কমাতে দৈনিক চার-পাঁচ কাপ গ্রিন টি পানের প্রয়োজন রয়েছে। গ্রিন টি থেকে সর্বোচ্চ ফল পেতে চিনি ছাড়াই পান করুন।
পাঁচ. শরীরচর্চা ছাড়াই পেটের চর্বি কমানোর একটি উপায় হলো ঘুমানো। স্থূলতা ও পেটের চর্বির সঙ্গে স্লিপ এপনিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণায় স্লিপ এপনিয়ার রোগীদের পেটে অতিরিক্ত চর্বি পাওয়া গেছে। কিন্তু প্রতিরাতে সাত-আট ঘণ্টা ঘুমালে পেটের চর্বি কমতে পারে।