সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : ৯ বছর বয়সী এক এতিম গৃহকর্মীকে এলোপাতাড়ি মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সিরাজগঞ্জ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দর্শন বিভাগের এক শিক্ষকাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত নারীর নাম শিউলি মল্লিকাকে (৩০)। শনিবার রাতে শহরের ফজল খান রোডস্থ নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শিউলি মল্লিকা তাড়াশ উপজেলার চৌপাকিয়া গ্রামের ডা. নুরুল ইসলামের স্ত্রী। তারা সিরাজগঞ্জ শহরের ফজল খান রোডে আব্দুল মোমিনের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন।  নির্যাতিতা গৃহকর্মীর নাম মিনতি খাতুন। সে উল্লাপাড়া উপজেলার লাহিড়ী মোহনপুর গ্রামের মৃত মক্কার মেয়ে।

সদর থানার ওসি মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, শনিবার বিকেলে শিশুটিকে মারপিট ও নির্যাতনের অভিযোগে তার মামা আবুল কাশেম প্রামাণিক বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। রাতেই আসামি শিউলি মল্লিকাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নির্যাতিত শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেছেন বাবা-মা মারা যাওয়ার পর শিশুটিকে তাড়াশ উপজেলার চৌপাকিয়া গ্রামে বেদেনা খাতুনের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে রাখা হয়। দুই বছর আগে শিশুটিকে পুত্রবধূ শিউলি মল্লিকার বাড়িতে কাজ করার জন্য পাঠিয়ে দেন বেদেনা খাতুন। সেখানে প্রায়শই শিশুটিকে নির্যাতন করতেন শিউলি। গত ৭ জানুয়ারি সকালে শিশুটিকে লাঠিপেটা করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টাও করেন শিউলি। এ সময় একটু সুযোগ পেয়ে শিশুটি দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

শিশুটি ভদ্রঘাট এলাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকলে মর্জিনা খাতুন নামে এক নারী তাকে উদ্ধার করে নিজের বাড়ি নিয়ে যান এবং শনিবার দুপুরে নানির বাড়ি উল্লাপাড়া উপজেলার চাঁড়ালগাঁতী গ্রামে পৌঁছে দেন। পরে শিশুটির কাছে বিস্তারিত শুনে শনিবার বিকেলে থানায় মামলা দায়ের করেন মামা কাশেম প্রামানিক।

শিউলি মল্লিকাকে ছাড়িয়ে নিতে শনিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত একদল শিক্ষককে থানায় দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ টি এম সোহেল রোববার বলেন, বিষয়টি লজ্জার, শুনে হতবাক হয়েছি। তার জামিনের চেষ্টা চলছে।

স্বাধীন বাংলা/জ উ আহমাদ