সিলেট ব্যুরো: দীর্ঘদিন পর জমে উঠেছে সিলেটের পর্যটন স্পট সমূহ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পর্যটকদের পদচারণায় মূখরিত হয়ে উঠেছে সিলেটের পর্যটন স্পট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সিলেট নগরীসহ সকল পর্যটনস্পটের হোটেল-মোটেলগুলোতে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই অনেকে বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন। হযরত শাহজালাল(রহ.) দরগাহ শরীফ, বিছনাকান্দি, জাফলং, লালাখাল, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর,মাধবকুন্ড, লোভাছড়া ও তাহিরপুরের শিমুল বাগানসহ বিভাগের সকল পর্যটন স্পটে ঢল নামে পর্যটকদের। মহান একুশে ফেব্রুয়ারী ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে টানা তিনদিনের ছুটিকে পেয়ে ইতোমধ্যে সিলেটে এসেছেন কয়েক হাজার পর্যটক । এতে রেস্তোরা ও আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জায়গা দিতে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বসন্তের শুরুতে জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল ও পান্তুমাই ঝর্ণাসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। শুক্রবার থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে কয়েক সহস্রাধিক যানবাহন নিয়ে পর্যটকের আগমন ঘটে গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায়। জাফলং জিরো পয়েন্ট, আদিবাসী খাসিয়া পল্লী, এশিয়ার সেরা সমতল জাফলং চা বাগান ছিল পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। এতে পর্যটক আর পর্যটকবাহী যানবাহনের কারণে জাফলংয়ের বিজিবি ক্যাম্প, মামার দোকানসহ কোথাও তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। হোটেল রেস্তোরাঁ ছিল চরম ব্যস্ততার মধ্যে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে ছিল সারিবদ্ধ যানবাহনের আসা যাওয়া। অপরদিকে, সাত পাহাড়ের মোহনা অবলোকন করতে পর্যটকরা ছুটে যান বিছনাকান্দিতে। পর্যটকদের এই ঢল সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হোটেল-রেস্তোরাঁর মালিকরা।
এদিকে, বিশ্বের ‘দ্বিতীয় সুন্দরবন’ খ্যাত রাতারগুল ‘সোয়াম্প ফরেস্ট’এলাকায়ও পর্যটকদের উপস্থিতি কোন অংশে কম ছিল না। মায়াবতী ঝর্ণা আর পান্তুমাই ঝর্ণার আসল যৌবনের রূপ না থাকলেও পর্যটন পিপাসুদের বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ার কেউ থামাতে পারেনি। প্রকৃতি কন্যা হিসেবে পরিচিত সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে পাথরের সারি সারি স্তূপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়। সীমান্তের ওপারে ভারত পাহাড়-টিলা আর ঝুলন্ত ডাউকি ব্রীজ। পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেল জলের খেলা দেখতে পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। এছাড়াও আদিবাসী জনগোষ্ঠী খাসিয়া সম্প্রদায়ের বসতঘর, খাসিয়া জনগোষ্ঠীর পান চাষ, জাফলং চা বাগানসহ আশপাশে হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটেছে। গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ জানান, টানা ৩ দিনের ছুটির জন্য পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় এখন এই অঞ্চলে। পর্যটকদের সেবা দিতে প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এফবিসিসিআই এর পরিচালক ও সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ জানান, বৈশ্বিক করোনা মহামারী পরিস্থিতির প্রথম দিকে সিলেটসহ সবখানেই হোটেল ব্যবসায়ীরা কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন ছিলেন। বর্তমানে এই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। শুধু পর্যটকই নন, বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩শ’ প্রবাসী নগরীর বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে অবস্থান করছেন। যার ফলে হোটেল ব্যবসায় গতি ফিরেছে।