নতুন কীটনাশকে মশা নিধনের আশ্বাস ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের
24, February, 2021, 5:35:26:PM
স্বাধীন বাংলা ডেস্ক : মশক নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নতুন করে কীটনাশক আমদানি করেছে। আগামী দুই সপ্তাহ পর থেকেই নতুন কীটনাশক প্রয়োগ শুরু হবে। আজ দুপুরে রাজধানীর টিটিপাড়া এবং কমলাপুর এলাকা সংলগ্ন মাঠে নিয়মিত পরিদর্শন শেষে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস একথা বলেন।
এ সময় শেখ তাপস বলেন, আমরা সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরখালী এলাকা পরিদর্শন করেছি। এটি মূলত প্রত্যন্ত একটি গ্রাম। এই এলাকায় কীভাবে আমাদের মহাপরিকল্পনার আওতায় নতুন করে যাতায়াত ব্যবস্থা এবং উন্নত শহরের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে আমরা সরেজমিন করেছি। এছাড়া রামপুরা এবং জিরানী খালের অংশ বিভিন্ন হাউজিং কম্পানি দ্বারা অবৈধভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং ভূমিদস্যুদের দ্বারা আমাদের শহর আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে। এসব বিষয়গুলো আমরা সরেজমিনে দেখেছি এবং নির্দেশনা দিয়েছি যাতে করে এগুলো অনতিবিলম্বে বন্ধ করা হয়।
এ সময় ট্রাকস্ট্যান্ড অপসারণ করে খেলার মাঠ করা হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মেয়র বলেন, এজন্যই আমরা আজ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের টিটিপাড়া, কমলাপুর সংলগ্ন এলাকায় পরিদর্শনে এসেছি। আমাদের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডেই যেনো একটি করে খেলার মাঠ এবং উন্মুক্ত জায়গা থাকে যেখানে আমাদের সন্তানেরা খেলতে পারে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা ইতোমধ্যেই আন্তঃওয়ার্ড ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও চালু করেছি। এই এলাকায় রেলওয়ের কিছু জমি আছে যেগুলো বিভিন্নভাবে অবৈধ দখল হয়ে আছে। আমরা রেলওয়েসহ সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করব যাতে এই জমিগুলো আমাদের হস্তান্তর করা হয়। তাহলে আমরা এখানে নতুন প্রজন্মের জন্য উন্মুক্ত খেলার মাঠের ব্যবস্থা করব।
খেলার মাঠ উদ্ধারের পর সেটা ক্লাবের অধীনে চলে যায়, সেখানে সাধারণ শিশুদের খেলার সুযোগ থাকে না, এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনের পরিকল্পনা কী? এমন প্রশ্নে শেখ তাপস বলেন, আমরা এখন যে জায়গাগুলো দখলমুক্ত করছি সেগুলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতায় উন্মুক্ত খেলার মাঠ হিসেবে উপযোগী করে তুলছি। যাতে সেখানে ওই এলাকার শিশুরা সেখানে উন্মুক্তভাবে খেলা করতে পারে। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ক্লাবকে আমরা আমাদের মাঠ দিবো না। আমরা এরই মাঝে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি জায়গা দখলমুক্ত করেছি। সেখানে খেলার মাঠের উপযোগী কার্যক্রম চলছে। আগামী মাস থেকে সেখানে শিশুরা খেলতে পারবে। এমনিভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডেই আমরা উন্মুক্ত খেলার মাঠ করবো।
খাল উদ্ধারের পাশাপাশি নদীকে কীভাবে সচল করা যেতে পারে, সেই প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, খালের সঙ্গে নদী সম্পর্কযুক্ত। খালগুলো থেকে পানি নিষ্কাশিত হয়ে নদীতে যাচ্ছে। আমরা আজ বালু নদী পরিদর্শন করেছি। রামপুরা এবং জিরানী খাল দিয়ে বালু নদীতে পানি প্রবাহিত হয়। বালু নদীও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। রামপুরা খালেরও একই অবস্থা। ফলে পানির প্রবাহটা নেই। আমরা ভিতরে পরিষ্কার করছি, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছি কিন্তু সেটা যদি প্রবাহ না পায় তাহলে পানিটা সঠিকভাবে নিষ্কাশিত হবে না। তবে আনন্দের সংবাদ এটাই যে আমরা ইতোমধ্যেই একটি পাম্প স্টেশন চালু করতে পেরেছি। আশা করছি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাকি পাম্পগুলোও আমরা চালু করতে পারবো। আমাদের প্রচেষ্টা হলো আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই ঢাকা শহরের পুরো খাল এবং কালভার্টের সম্পূর্ণ সংযোগটা পানি প্রবাহের আওতায় নিয়ে আসা।
মশার ওষুধ ছিটানোর বিষয়ে তিনি বলেন, মশার ওষুধের মান যাতে ঠিক থাকে সেটার জন্য আমরা বারবার পরীক্ষা করাই। তবে কিছুদিন ধরে একটি কীটনাশক ব্যবহৃত হলে মশা সেটিতে সহনশীল হয়ে যায়। এজন্য আমরা কীটনাশক পরিবর্তনও করেছি। এরই মাঝে আমরা নতুন কীটনাশক আমদানি করেছি। আগামী দুই সপ্তাহ পর থেকেই নতুন কীটনাশক প্রয়োগ করা হবে যাতে করে মশকের যে সহনশীলতা রয়েছে সেটা থেকে বেড়িয়ে আসা যায়। দুই সপ্তাহ পর থেকে মশা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে এসময় মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করেন।