জৈন্তাপুর প্রতিনিধি: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় টিলা কেটে মসজিদ ধ্বংসের পায়তারা করছে একটি মহল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পূর্ব শত্রুতার জের ও প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে মসজিদ সংলগ্ন ভূমি থেকে মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ করেছেন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফজলুর রহিম। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের উত্তর বাঘেরখাল গ্রামে।
গতকাল কাল (৭ মার্চ) ফতেপুর ইউনিয়নের উত্তর বাঘেরখাল পূর্ব জামে মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিদের পক্ষে কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফজলুর রহিম মসজিদ রক্ষার দাবী জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করেছেন।
সাধারণ সম্পাদকের আবেদন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জৈন্তাপুর উপজেলার উত্তর বাঘেরখাল পূর্ব জামে মসজিদটি প্রায় ষাট বছরের পুরনো। সম্প্রতি টিলার উপর মসজিদটি সংস্কার করে ১ম তলার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। মসজিদ সংস্কারে স্থানীয় সংসদ সদস্য , প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ অনুদান প্রদান করেছেন।
মসজিদ সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার পর গত পহেলা মার্চ বিকেলে মসজিদের নিকটবর্তী ভূমির মালিক জাহাঙ্গীর আলম উক্ত মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের টিলায় এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে ২০/২৫ ফুট গভীর মাটি খনন শুরু করেন। ফজলুর রহিম জানান, মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিদের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে এবং প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে জাহাঙ্গীর আলম এস্কেভেটর দিয়ে মাটি খনন শুরু করেন। তিনি জানান, মসজিদ সংলগ্ন ভূমিতে মাটি খননের ফলে বর্ষা মৌসুমে মাটি ধসে মসজিদটি ভেঙ্গে পড়তে পারে। এই আশংকায় আমি ও কমিটির লোকজন মাটি খননে বাধা প্রদান করি। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম আমাদের গালিগালাজ করে হত্যার হুমকি প্রদান করেন।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘ সময় উক্ত মসজিদ কমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় তারা মসজিদ কমিটি থেকে বেরিয়ে একই গ্রামে প্রায় পাঁচশ মিটার দূরে অন্য আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এর পর থেকে জাহাঙ্গীর আলম উত্তর বাঘেরখাল পূর্ব জামে মসজিদ নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। তারা পুরাতন মসজিদের উন্নয়নের জন্য সৌদি আরবে আদায়কৃত চাঁদা দিয়ে নতুন মসজিদ তৈরী করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় মুসল্লিরা জানিয়েছেন, জাহাঙ্গীর আলমদের ষড়যন্ত্রে উক্ত মসজিদে চলাচলে রাস্তার উন্নয়ন কাজ বারবার ব্যহত হয়েছে। সর্বশেষ, স্থানীয় মুরুব্বি ও মসজিদ কমিটির বাধা উপেক্ষা করে মসজিদ সংলগ্ন ভূমির মাটি এস্কেভেটর দিয়ে খনন করে মসজিদটি ধ্বংস করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, একতলা বিশিষ্ট উত্তর বাঘেরখাল পূর্ব জামে মসজিদটি টিলার উপর অবস্থিত। মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম সংলগ্ন জমির মালিক জাহাঙ্গীর আলম ও তার পরিবার। ঐ জমি মসজিদের ভূমি লেভেল থেকে প্রায় ১৫ ফুট নিচু। এ অবস্থায় এস্কেভেটরদিয়েআরো ৮/১০ফুট খনন করা হয়েছে। মসজিদের ভূমির সীমানা ঘেষে মাটি খননের ফলে বৃষ্টিতে মাটি ধসে মসজিদটি ভেঙ্গে পড়তে পারে।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহিম সহ মুসল্লিরা মসজিদটি রক্ষায় সকলের সহযোগীতা কামনা করে প্রশাসনের প্রতি প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।