কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশ ও র্যাব পরিচয়ে ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা নয়ন জোয়ার্দ্দার আটক হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদেরকে জানান পুলিশ সুপার। আটকৃত হচ্ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেরীপাড়া এলাকার আইয়ুব জোয়ার্দ্দারের ছেলে নয়ন জোয়ার্দ্দার (৩৬)।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খাইরুল আলম বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় ডিবি পুলিশ ও র্যাব পরিচয় দিয়ে মোটর সাইকেলযোগে একটি ছিনতাইকারী চক্র মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে আসছিল। গত ৪ মার্চ কুষ্টিয়া শহরে পড়াশোনা করেন সাঈদ। সাইদের মা অসুস্থ অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি থাকায় তার দেখাশুনার করার জন্য এবং অসুস্থ মায়ের খাবার এনে দিত সাইদ। তার মায়ের দেখাশুনা ও খাবার দেওয়া শেষ হলে সাইদ তার এক মেয়ে বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে শেখ রাসেল হরিপুর সেতুতে ঘুরতে যায়। সেতুর মাঝে থাকা অবস্থায় বিপরীত থেকে একটি মোটর সাইকেল তাদেরকে ফলো করে এবং অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাদেরকে কাছে ডেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন। পরে সাইদকে অজ্ঞাত দুইজন ব্যক্তি ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাইদের মোটর সাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চান। সাইদ ভয়ে গাড়ীর যাবতীয় কাগজপত্র দেখান। অজ্ঞাত ব্যক্তিরা সাইদকে বলে তুই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত আছিস। সাইদ বিষয়টি অস্বীকার করলে তারা বলে তোকে এখন থানাতে যেতে হবে। অতঃপর সাইদ থানাতে যেতে রাজী হলে সাইদের কাছে থাকা মোটর সাইকেলের চাবি কেড়ে নেন এবং তাদের মধ্যে একজন মোটরসাইকেলের উপর বসে গাড়ী চাবি দিয়ে মোটর সাইকেল চালু করেন। মোটরসাইকেল নিয়ে কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম নামক স্থানে পৌছালে অপর দিকে কুমারখালী থানার একটি পুলিশ পিকআপ ভ্যান আসতে দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে ডিবি পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা মোটরসাইকেল ঘুরানোর চেষ্টা করেন। এরই এক সময়ে মোটর সাইকেলের পিছনে থাকা সাইদ তার গাড়ীর সামনে এসে দ্রুতভাবে চাবি খুলে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান এবং মোটর সাইকেলটি রাস্তায় পড়ে বন্ধ হয়ে যায়।
এ পরিস্থিতিতে ছিনতাইকারীরা পুলিশের ভয়ে মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায় বলে জানা যায়। এই চক্রের সদস্যদের আটকের জন্য পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থার শহর ও শহরের বাইরে বিভিন্ন এলাকায় দিন রাত অভিযান পরিচালনা করে। এর এক পর্যায়ে গতকাল রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানার টিম তাকে গ্রেফতার করেন। এ বিষয়ে নয়ন জোয়ার্দ্দার নামে মডেল থানায় মামলা হয়। তাকে আদালতে প্রেরণ করে অন্যান্য ঘটনার এবং তার সহযোগিদের অবস্থান সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে জিজ্ঞাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার (এসপি)।
এদিকে প্রেস ব্রিফিং চলাকালে সাংবাদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিং শেষের ঘোষণা না দিয়ে সবাইকে শান্ত হতে বলে চলে যান। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং সাংবাদিকরা প্রেস ব্রিফিং শেষ না করে চলে যান।