স্বাধীন বাংলা অনলাইন: হবিগঞ্জ ও গাজীপুরে পুলিশের সাথে ছাত্রদলের দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৩৩ জন আহত হয়েছেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবারবুলেট নিক্ষেপ করে। হবিগঞ্জ থেকে স্বাধীন বাংলার প্রতিনিধির পাঠানো খবরে জানা যায়, শনিবার দুপুরে জেলা ছাত্রদল নেতাকর্মীরা শায়েস্তানগর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ ছুটে এলে নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় স্বেচ্ছাসেকদল নেতাকর্মীরাও এসে যোগ দেন। একপর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র জিকে গউছের ছেলে ব্যারিস্টার মঞ্জুরুল কিবরিয়া প্রীতম, ভাই জিকে গফ্ফার ও তার ছেলে আদনান ফারহাদ রাফিদসহ অন্তত ৯ জনকে আটক করা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক মেয়র জিকে গউছ জানান, তার বাসা থেকে ভাই, ছেলে ও ভাতিজাকে আটক করেছে পুলিশ। এটি একটি পরিবারের প্রতি জুলুম।
সংঘর্ষের ঘটনায় আহত কনস্টেবল মো. রিয়াজকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়েছেন।
সদর থানার ওসি মো. মাসুক আলী জানান, বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রধান সড়কে ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হওয়ার পাঁয়তারা করছিল। পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণভাবে ভেতরে রাস্তায় কর্মসূচি পালন করার জন্য বলেছে। কিন্তু তারা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মেইন রোডে গাড়ি চলাচলে বাধাবিঘ্ন এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। আহত পুলিশ সদস্যরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাজীপুরে ছাত্রদল-যুবদলের মিছিল চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশসহ যুবদল-ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে শহরের রাজবাড়ি সড়কে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ৩ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছায় যুবদলের একটি মিছিল। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও ফাঁকাগুলি করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে জুবায়ের (২০), মাসুদ (৩৮) ও শামীম (৪০) নামে যুবদল ও ছাত্রদলের তিন কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
গাজীপুর সদর মেট্রোথানা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম শামীম জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছিল। দুপুর একটার দিকে যুবদলের একটি মিছিল শহরের রেলগেট এলাকা থেকে দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছালে বিনা উস্কানিতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। একপর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে মহানগর যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক আল রাজুসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
সদর মেট্রোথানা যুবদলের আহবায়ক মাহমুদ হাসান রাজু বলেন, ‘সংঘর্ষে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার জাকির হাসান বলেন, ‘উশৃঙ্খল নেতাকর্মীদের ইটের আঘাতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছে।’
সদর মেট্রো থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে যুবদল ও ছাত্রদলের তিন কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’