স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট : চলে গেলেন দেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
মহামারী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই রোববার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।
মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে মিতা হকের জামাতা অভিনেতা মুস্তাফিজ শাহিন জানান, কেরানীগঞ্জের বড় মনোহারিয়ায় বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
পাঁচ বছর ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন মিতা হক। নিয়মিত ডায়ালাইসিস নিতে হতো তাকে। তবে সুস্থভাবেই জীবনযাপন করছিলেন তিনি। চারদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে শনিবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই হাসপাতালের বেড থেকেই চিরবিদায় নিতে হলো তাকে।
মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালে। তিনি প্রয়াত অভিনেতা-পরিচালক খালেদ খানের সঙ্গে স্ত্রী। এই দম্পতির ফারহিন খান জয়িতা নামে এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
মিতা হক প্রথমে তার চাচা ওয়াহিদুল হক এবং পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সনজীদা খাতুনের কাছে গান শেখেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বার্লিন আন্তর্জাতিক যুব ফেস্টিভালে অংশ নেন। ১৯৭৬ সাল থেকে তিনি তবলাবাদক মোহাম্মদ হোসেন খানের কাছে সঙ্গীত শেখা শুরু করেন। ১৯৭৭ সাল থেকে নিয়মিত তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে সঙ্গীত পরিবেশনা করছেন।
তিনি সুরতীর্থ নামে একটি সঙ্গীতপ্রশিক্ষণ দল গঠন করেন যেখানে তিনি পরিচালক ও প্রশিক্ষকে হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া তিনি ছায়ানটের রবীন্দ্রসঙ্গীত বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন।
২০২০ সালে মিতা হক একুশে পদকে ভূষিত হন। তিনি ২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন। এরপর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মিতা হককে বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রখ্যাত এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশে রবীন্দ্র-চর্চা এবং রবীন্দ্রসঙ্গীতকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার প্রচেষ্টা মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
রাষ্ট্রপতি মিতা হকের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী মিতা হকের মৃত্যুতে শোক ও দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকবার্তায় প্রয়াত শিল্পীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।