স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট : দেশে মহামারী করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে সারাদেশে চলছে লকডাউন। এমন পরিস্থিতিতে এবার পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উদযাপন সীমিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-ঢাবির চারুকলা অনুষদ চত্বরে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে। এ আয়োজনে মাত্র ১০০ জন অংশ নিতে পারবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কোভিড-১৯ মহামারীর এই খারাপ সময় অতিক্রম করে ভালো কিছুর আশায় এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার থিম নির্ধারণ করা হয়েছে, “কাল ভয়ঙ্করের বেশে এবার ঐ আসে সুন্দর”। এ ছাড়া রাজা-রানি, বর্ম এসব বিষয়গুলোকে এবার তুলে ধরা হবে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে থাকবে ১০০টি ডিজাইন।
অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, এ বছর করোনার কারণে সব আয়োজনেই জনসমাগম নিষিদ্ধ। তবে যেহেতু এটি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর, সেহেতু যদি আমরা কিছুই না করি, তবে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। তাই সীমিত পরিসরে হলেও মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করবে কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও বলেন, শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ চত্বরেই সীমাবদ্ধ থাকবে, বাইরে বেরুবে না এবং প্রবেশ সংরক্ষিত থাকবে। আমাদের চারুকলা অনুষদের চত্বর অনেক বড়, আশা করি, আমরা নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনেই সব সম্পন্ন করতে পারব।
এরই মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। তৈরি করা হচ্ছে মুখোশ। আঁকা হচ্ছে বিভিন্ন আল্পনা। আর চারুকলার বাইরের প্রাচীরও রাঙানো হচ্ছে বিভিন্ন রঙের আল্পনায়।
১৯৮৬ সালে যশোরে চারুপীঠ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো নববর্ষ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। সেই শোভাযাত্রায় ছিল বিভিন্ন পাপেট, বাঘের প্রতিকৃতি, পুরনো বাদ্যযন্ত্রসহ আরো অনেক শিল্পকর্ম স্থান পায়। শুরুর বছরেই যশোরে শোভাযাত্রা আলোড়ন তৈরি করে। পরবর্তীতে ১৯৮৯ সাল থেকে যশোরের সেই শোভাযাত্রার আদলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।