দক্ষিণ সুনামগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার হাওরে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দুর্যোগ-দুর্বিপাক ছাড়াই সময়মতো কষ্টে বুনা ফসল ঘরে তুলতে পেরে কৃষকদের মুখে এখন রাজ্য জয়ের হাসি। শ্রমিক সংকট না থাকায় করোনা শঙ্কার মধ্যেও ধান গোলায় তুলতে কোন সমস্যা হয়নি কৃষকদের। বাজারে ধানের ভালো দাম থাকায় লাভবান হচ্ছেন তারা।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা গেছে, হাওরের শতভাগ ধান কাটা প্রায় শেষ। অনেক কৃষক তাদের ধান কাটা মাড়াই শেষ করে গোলায় তুলছেন। এ বছরের মত ধান তোলার অনুকূল পরিবেশ কবে পাওয়া গেছে ঠিক মনে নেই চাষিদের। সরকার ভর্তুকি মূল্যে হারভেস্টার মেশিন দেয়ায় উপকৃত হয়েছেন কৃষকরা। প্রতিটি কৃষক পরিবারে এখন আনন্দের ছাপ। ধান শুকানোর পাশাপাশি গৃহপালিত পশুর জন্য খর শুকাতেও ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা৷
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরে এ উপজেলায় ২২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। এ বছর ধান উৎপন্ন হয়েছে এক লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন। যার বাজার মূল্য হবে ২৫০ কোটি টাকারও বেশি।
উপজেলার ডুংরিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল ওয়াহিদ জানান, প্রতিবছর বোরো ধান উত্তোলনের সময় ঝড় বৃষ্টি, অকাল বন্যা, শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করে আমাদেরকে বোরো ফসল ঘরে তুলতে হত। প্রতি মুহূর্ত মনে শঙ্কা থাকতো এই বুঝি কষ্টের ফসল নষ্ট হয়ে গেল। কিন্তু এবার প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় এবং শ্রমিক সংকট না থাকায় কোন শঙ্কা ছাড়াই ধান গোলায় তুলতে পেরে ভালো লাগছে। এমন আবহাওয়া এর আগে কখনোই পাইনি।
১০ কেদার জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছিলেন কৃষক হান্নান মিয়া। তিনি বলেন, সব ধান কাটা শেষ। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার আমরা খুশি মনে ধান তুলতে পেরেছি৷ জমিতে ফসল ভালো হওয়ায় লাভবান হয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব আল মারুফ বলেন, হাওরের শতভাগ ধান কাটা শেষ৷ আবহাওয়া ভালো থাকায় এবং ধানের নায্য দাম থাকায় কৃষকরা খুশি৷ এবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জে লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদিত হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন বলেন, শ্রমিক সংকট না থাকায় দ্রুত হাওরের ধান গোলায় তুলতে সক্ষম হয়েছেন কৃষকরা। দক্ষিণ সুনামগঞ্জের প্রতিটি কৃষক পরিবারে এখন হাসির ঝিলিক বইছে।