সখীপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি : আট থেকে দশ বছর বিদেশ করেছি কোনো লাভ হয়নি। কোনোমতে ঋণ পরিশোধ করেছিলাম। কি করি, কি করি এরকম হতাশা আমাকে সবসময় তাড়া করে বেড়াত। এরপর টিভি ও ইউটিউবে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষের সফলতা দেখে কৌতুহলী হলাম লেবু চাষ করতে। প্রথমে ঝুঁকিই মনে হতে লাগলো তারপরও পিছনের দিকে না তাকিয়ে এগোতে লাগলাম সামনের দিকে। আবার উদ্যোগ নিলাম ব্যাংক লোন করব। জমিও যথারীতি পেয়ে গেলাম। শুরু করলাম আর একটি জগত, নতুন প্রবাস। কথাগুলো বলেছেন, কচুয়া পূর্বপাড়ার বাচ্ছু মিয়ার ছেলে মোফাজ্জল হোসেন।
সরেজমিন, বুধবার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে তার কথা হয়। বাবার পর্যাপ্ত জমি না থাকায় ২০১৬ সালে কচুয়া বাজারের দক্ষিণ পাশে ২১০ শতাংশ জমি তিন লাখ টাকা দিয়ে ১০ বছরের জন্য নেন। এরপর জমি অভিজ্ঞ লোকদের পরামর্শে চাষ উপযোগী করে তুলেন। উন্নত মানের ১২‘শ চারা কিনে এনে শুরু করলেন লেবু চাষ। বাগানের নাম দিলেন জান্নাতুল লেমন গার্ডেন। দুই বছর পর থেকে কিছু কিছু লেবু আসা শুরু হল তার বাগানে। পরের বছর ৫০ ভাগ গাছে লেবু আসতে লাগলো। তিন বছর পর পুরো গাছে লেবু আসতে লাগলো। মোফাজ্জলের ভাগ্যাকাশে আলোর ঝলকানি দেখা গেল। এখন তার প্রতি বছর লেবু এবং চারা বিক্রি করে প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা আসছে। প্রতিদিনই তার বাগানে লেবু এবং চারা কিনার জন্য গ্রাহকরা ভিড় জমাচ্ছে।
এখন তিনি পরিপাটি করে বাড়িঘর নির্মাণ শেষে বাগানের পরিধিও পর্যায়ক্রমে আরও বাড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি আর একটি জমি লিজ নিয়ে কমলা চাষ শুরু করেছেন। সব মিলিয়ে তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। এখন সুখে স্বাচ্ছ্বন্দে দিনাতিপাত করছেন।
তিনি জানান, বিদেশে থেকে আমি কিছুই করতে পারি নাই। লেবু চাষ করে আল্লাহ আমার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। দেশে থেকে পরিশ্রম করে স্বাবলম্বী হওয়া যায় এটি আমি বুঝতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, আমার বাগানটি সখীপুর-সাগরদিঘী সড়কের পাশে থাকায় আমি লেবু এবং চারা বিক্রির অর্ডারও বেশি পাই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সখীপুরের মাটি লেবু চাষ উপযোগী। এখানে লেবু চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।