সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল বাগিচাবাজার গরুর হাট নিয়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। পার্শ¦বর্তী হরিপুর গরুর বাজারের ইজারাদার পক্ষ যেকোনো সময় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে চিকনাগুল গরুর হাটের বিরুদ্ধে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চিকনাগুল বাগিচা বাজারে একটি গরুর হাট গড়ে তোলেন চা বাগান এবং সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে। বাজারটি প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে স্থানীয় লোকজনসহ হরিপুর গরুর বাজার কর্তৃপক্ষ তার বিরোধীতা করে আসছেন। কিন্তু চিকনাগুল বাজার কর্তৃপক্ষ পেশিশক্তি ব্যবহার করে অবৈধ বাজারটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ওই বাজারটির ব্যপারে পদক্ষেপ নিয়েছে কয়েকবার। কিন্তু বাজারটি বন্ধ করতে পারেনি।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত আজমেরী হক সর্বশেষ ১০ মার্চ সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদনে চিকনাগুল বাজার নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে হাবিবনগর চা বাগান, সড়ক ও জনপথ এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা নিয়ে অবৈধভাবে চিকনাগুল বাজারটি গড়ে উঠেছে। বাজারটি উপজেলার সায়রাত মহলযুক্ত কোনো বাজার নয়। বাজারটি বিধিবহির্ভূতভাবে ইজারা দিয়ে একটি মহল বছরের পর বছর অন্যায় স্বার্থ হাসিল করছে। ২০১৯ সালে ইজারাদার আবদুল মতিন গরুর বাজার থেকে টোল আদায় করতে গেলে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয় প্রশাসন আইন শৃঙ্খলার স্বার্থে তাতে হস্তক্ষেপ করে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো এলাকায় গরুর বাজার প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্ধারিত পরিমাণ ভূমির মালিকানা সরকার বরাবরে ন্যাস্ত করতে হয়। কিন্তু চিকনাগুল বাগিচা বাজার গরুর হাটের ব্যাপারে সে ধরণের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অবৈধভাবে গরুর বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয়। চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বাজারটি পরিচালনা করছে। কিন্তু তাতেও বিভিন্ন বিধি নিষেধ রয়েছে। ওইসব বিধি নিষেধের একটিও বাস্তবায়ন করেনি চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদ।
স্থানীয়রা জানান, বাজারটির কার্যক্রম অবৈধভাবে পরিচালিত হওয়ায় সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া গরুর হাটে নেপথ্যে এখানে নানান ধরণের অবৈধ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ওই অসন্তোষ সংঘর্ষের দিকে ধাবিত হচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া হরিপুর গরুর বাজার কর্তৃপক্ষ ওই অবৈধ বাজার চিকনাগুল বাজারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এতে যেকোনো সময় রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত আজমেরী হক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, বিষয়টি তিনি জানেন না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।