ক্রীড়া প্রতিবেদক : টানা তিন ম্যাচ জিতে ফুরফুরে মেজাজে থাকা বাংলাদশে হেরেছে সর্বশেষ ম্যাচে; অন্যদিকে টানা তিন ম্যাচ হেরে যাওয়া অস্ট্রেলিয়াকে বিষণ্ণতা থেকে মুক্তি দিয়েছে একটি জয়। অসিদের জয়ে সিরিজ ৩-১ হলেও বাংলাদেশ দলে তার নেতিবাচক কোনো প্রভাব নেই। বরং ১০৪ রানের পুঁজি নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ১৯ ওভার পর্যন্ত আটকে রাখতে পারায় খুশি। ১০৫ রানের লক্ষ্য দেওয়ার পরও বোলাররা যেভাবে চেষ্টা করে গেছেন, তাতেই অনুপ্রাণিত স্বাগতিকরা। এই প্রেরণা কাজে লাগিয়েই সিরিজের শেষটাও জয় দিয়ে রাঙাতে চায় টিম বাংলাদেশ।
চার ম্যাচে বোলাররা ছিলেন পিকচার পারফেক্ট। প্রতি ম্যাচে ধ্রুপদী বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানকে আটকে রেখেছিলেন তারা। মোস্তাফিজ, শরিফুল, মেহেদী, সাকিবদের বোলিং ছিল একেবারেই নিয়ন্ত্রিত। আঁটসাঁট। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা রীতিমত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। ওপেনিং নাঈম ও সৌম্য প্রতি ম্যাচেই উইকেট ছুঁড়ে এসেছেন। সৌম্য টানা চার ম্যাচে যেভাবে আউট হয়েছেন তা স্রেফ দৃষ্টিকটু। নাঈম ভরসা হয়ে উঠেও কোনো ম্যাচে বড় কিছু দিতে পারেননি। সাকিবের ব্যাটিং পারফরম্যান্সও ছিল গড়পড়তা। মাহমুদল্লাহ তৃতীয় ম্যাচের নায়ক হলেও মন্থর ইনিংসে একমাত্র ফিফটি পেয়েছেন। আগে পরের ম্যাচগুলিতেও দায়িত্ব নিতে পারেননি অধিনায়ক।
আজকের ম্যাচে সৌম্য সরকারকে বিশ্রাম দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। চতুর্থ ম্যাচেই তাকে বাদ দেওয়ার কথা উঠেছিল। শেষ সুযোগ দিতেই নাঈম শেখের সঙ্গে ওপেনিংয়ে রাখা হয়েছিল তাকে। বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান চতুর্থ ম্যাচেও ফেল করায় আজ নাঈমের জুটিতে দেখা যেতে পারে শেখ মেহেদীকে। মোহাম্মদ মিঠুনের খেলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ব্যাটসম্যানরা এবারের সিরিজে নিজেদের ছায়া হয়ে থাকলেও মাহমুদউল্লাহ শেষটা ভালো করার পাশাপাশি ব্যাটসম্যানদের থেকেও ভালো কিছুর আশায় আছেন। তিনি বলেন, ব্যাটিংটা আমাদের আরও ভালো করা উচিত। শেষ ম্যাচে ব্যাটিংয়ে উন্নতি চাই। ব্যাটিংয়ে আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের সেই সামর্থ্য আছে। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে ব্যাটিংটা আরেকটু ভালো করতে পারি।
কিভাবে ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নিতে পারেন সেই উপায় বাতলে দিলেন অধিনায়ক, কোনেভাবে ১০-১২ রান…একটা চার, কয়েকটা দুই বা সিঙ্গেলের মাধ্যমে রান বের করতে পারি তাহলে দলের ব্যাটিং ইউনিট খুশি হবে। এটা বোলারদেরও আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। তাহলে তারা ডিফেন্ড করতে পারবে।
অস্ট্রেলিয়া সিরিজের শুরু থেকে বাংলাদেশের উইকেটে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেনি। তবে চার ম্যাচ খেলার পর নিশ্চয়ই ধারণা পেয়েছে। এজন্য শেষ ম্যাচে স্পিন আক্রমণ বাড়ানোর চিন্তাও করছে তারা। শেষ ম্যাচে আস্টান আগার, লেগ স্পিনার মিচেল সোয়েপশন ও অ্যাস্টান টার্নারের সঙ্গে আডাম জাম্পাকে নিয়ে মাঠে নামলেও অবাক হবার থাকবে না।
কারণ, মিরপুরে প্রতিটি ম্যাচই হয়েছে লো স্কোরিং। স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চার স্পিনার খেলাতেও পারে অজিরা। বাংলাদেশের একাদশে একাধিক পরিবর্তন আসতে পারে।
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ আয়োজনে যেমন চ্যালেঞ্জ ছিল, ঠিক তেমনি মাঠের ভেতরেও সিরিজ জিততে চ্যালেঞ্জ ছিল। মাঠের বাইরে ও ভেতরে দুই জায়গায় সফল বাংলাদেশ। এখন শুধু আনন্দমাখা শেষের অপেক্ষা।