তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে স্টোরজাত আলু নিয়ে কৃষক ও মজুদদারেরা বিপাকে পড়েছেন। মৌসুমী ব্যবসায়ী ও আলুচাষিরা মৌসুমে আলু বিক্রির পরেও তারা পুনরায় আলু চাষের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও বেশী দামের আশায় আলু স্টোরে মজুত করেছে। কিন্তু বর্তমানে খুচরা বাজারে আলুর দাম থাকলেও পাইকারী বাজারে নিতান্তই কম।
প্রতি বিঘায় আলু চাষে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। এতে উৎপাদন বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মন। প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়ে প্রায় ১৩ টাকা থেকে ১৪ টাকা। অথচ পাইকারী হিসেবে স্টোরে আলু বিক্রি চলছে ১১ টাকা থেকে ১৩ টাকা। মৌসুমের চেয়েও আলুর দাম কমসহ উপকরণের অতিরিক্ত মুল্যে ও শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধিতে আসন্ন মৌসুমের আগে ন্যায্যমূল্যে আলু বিক্রি করতে না পেরে আলুচাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
এদিকে মৌসুমী আলু ব্যবসায়ী মজুদদাররা স্টোরে রাখা আলুতে লাভের চেয়ে দ্বিগুন লোকশানে তাঁদের মাথায় হাত পড়েছে। আলুর ন্যায্য দাম না পেলে তাঁদের পথে বসতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, তানোরে আলুচাষ উপযোগী উর্ব্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ায় প্রচুর পরিমাণে আলু চাষ হয়। বিগত বছর আলুর ভালো ফলন ও দাম পেয়ে বেশী লাভের আশায় এবারে অধিক আলু চাষে কৃষকরা ঝুঁকে। কিন্তু সে আশা গুঁড়ে বালি হযে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া এলাকার অনেক মৌসুমী আলু ব্যবসায়ী আলু ক্রয় করে স্টোরে মজুত করে রেখেছেন। মজুদাররা মওসুমে ১ বস্তা (৬০ কেজি) ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় আলু ক্রয় করেছে। সেই আলু স্টোর খরচ বস্তায় ২৫০ টাকা, বস্তার দাম ৮০ টাকা বহন ও শ্রমিক খরচ ৪০ টাকা প্রতি বস্তায় খরচ হয়েছে মোট ১১২০ টাকা।
আলুচাষিরা জানান, স্টোরের ভাড়া দফায় দফায় বাড়ছে, বাড়ছে শ্রমিকের মজুরী ও কীটনাশকের মূল্য, এসব দেখার কেউ নেই। আলুচাষি লুৎফর রহমান বলেন, খুরচা বাজারে ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে। অথচ স্টোরজাত আলুর মূল্য প্রতি কেজি ১১ টাকা থেকে ১৪ টাকায় মিলছে। সকল খরচ দিয়ে পাইকারি পর্যায়ে তাদের প্রতি বস্তায় ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা লোকশান গুনতে হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে সরকারী ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন। সরকারী ব্যবস্থায় আলু দেশ ও দেশের বাইরে নেয়ার ব্যবস্থা থাকলে তাদের দুরাবস্থা কমতো। সরকারীভাবে কোন ব্যবস্থা না থাকায় আক্ষেপ করে তাঁরা বলেন, স্টোরজাত আলুর যে অবস্থা তা দেখার কেউ নেই।