জৈন্তাপুর প্রতিনিধি :
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সারী রেঞ্জের পাহাড় থেকে রাতভর মূল্যবান গাছ চুরি হলেও স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা নিরব ভূমিকা পালন করেছেন। স্থানীরা অভিযোগ করে বলেন, অভিযোগ রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন আহমেদকে জানানো হলেও তিনি নিরবতা পালন করছেন।

সরেজমিনে এলাকাঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সারী রেঞ্জের নিয়ন্ত্রণাধীন ইন্দারজু, ঢুপি ও ডৌডিক এলাকায় উপকারভোগীদের সমন্বয়ের মাধ্যমে রোপিত মূল্যবান গাছ রাতের আঁধারে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। এ বিষয় বিট অফিসের খাস লোক ফরিদ আহমদ চুরাকারির সাথে জড়িত বলে জানা যায়। বিষয়টি সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন আহমেদকে এলাকাবাসী ও উপকারভোগীরা গাছ কাটা ও গাড়ী ভর্তি করে নিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদ দিলেও তিনি কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন না।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুুক সারী রেঞ্জের ও সারী বিটের একটি বিশ্বস্ত সূত্র গাছ চুরির ঘটনা স্বীকার করেছে। তারা বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত একটি গাছ খেকু চক্র অদৃশ্য ইশারায় সারী রেঞ্জের বিভিন্ন বাগান ও টিলা থেকে মূল্যবান গাছ রাতের আঁধারে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি জেনেও না জানার ভাব ধরে আছেন সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন আহমেদ।
 
টিলা ঘুরে দেখা যায় সারী রেঞ্জের নিয়ন্ত্রণাধীন ইন্দারজু, ঢুপি ও ডৌডিক পাহাড়ে বড় বড় কয়েক শতাধিক গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। মাটিতে রয়েছে শুধুমাত্র গাছের ঘুড়ালী, ঢালপালা। এছাড়া অর্ধকাটা অবস্থায় আছে আরও কয়েকশ’ গাছ। এগুলো চলতি সপ্তাহের মধ্যে কেটে নিয়ে যাবে গাছ খেকুরা। পাহাড়ের বিভিন্ন অংশের প্রায় ২০/৩০টি গাছের গুড়ালী অর্ধকাটা অবস্থায় রয়েছে। গাছ কাটার কাজে ব্যবহৃত মই রশি বিভিন্ন অংশে মজুদ রাখার দৃশ্যও দেখা মিলে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালিক, আব্দুল মান্নান, এম এম রুহেল, হানিফ মিয়া ও সাজু মিয়া জানান, স্থানীয় এলাকাবাসী নিজেদের বাড়ী হতে গাছ কেটে সো-মিলে নিয়ে যাওয়ার পথে নানা অজুহাতে গাছ আটকের চেষ্টা চালায় রেঞ্জার ও বিট কর্মকর্তা। অনেক সময় তাদের নাজেহালের কারনে এলাকাবাসী তাদেরকে খুশি করতে হয়। কিন্তু সারী রেঞ্জ অফিসের রেঞ্জার পদে সাদ উদ্দিন আহমেদ যোগদানের পর থেকে গাছ খেকু চক্রের সদস্যরা নিরাপদে সংরক্ষিত ইন্দারজু, ঢুপি ও ডৌডিক এলাকা হতে মূল্যবান গাছ চুরি করে নিয়ে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ রেঞ্জার সাদ উদ্দিন আহমদের অদৃশ্য ইশারায় সারী রেঞ্জেরে গাছ চুরি করছে চক্রটি।
 
সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন আহমেদ নিকট গাছ চুরির বিষয় জানতে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রেঞ্জ অফিসে গিয়েও দেখা পাওয়া যায়নি।
জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, এ বিষয়ে কথা বলতে সারী রেঞ্জ  কর্মকর্তাকে কয়েকবার আমার অফিসে আমন্ত্রণ জানালেও তিনি রহস্যজনক করনে আসেন না।  এলাকাবাসী গাছ চুরির বিষয়ে আমাকেও জানিয়েছেন।
 
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আপনারা সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনারা
আমাকে তথ্য দিন, আমি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবো।