চলতি মৌসুমে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে আউশের বাম্পার ফলন দেখা কৃষকের মুখে সোনালি হাসি ফুটেছে। ভালো ফলনের পাশাপাশি ধানের দামও ভালো পেয়ে খুশি এ অঞ্চলের কৃষকরা। আর এ ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন দেখে আউশ ধানের চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকে কৃষকই। কৃষকরা জানান, আউশের বাম্পার ফলন এবং স্থানীয় বাজারে আগের থেকে প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রি করতে পারছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে আউশ মৌসুমে ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে স্থানীয় জাতের আউশ ধান রোপন হয়েছে ১২০ হেক্টর জমিতে এবং ‘উফশী’ আউশ ধান রোপণ হয়েছে ৭ হাজার ৩৮০হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার টন ধান। উপজেলায় এবারে ইরি-২৭,৪৮, বাউ-৬৩, (আবদুল হাই) ও বিআর ৪২-৪৩ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এবারে চাষী পর্যায়ে বীজ উৎপাদনের জন্য সরকারি অর্থায়নে ২৪টি প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। গতবারের আউশের ভালো ফলন দেখে এবারে আউশ চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। এসব জাতের মধ্যে ব্রিধান-৪৮ চাষে ব্যাপকভাবে সাড়া পেয়েছে কৃষকের মাঝে। অন্যান্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ ফলন হয়েছে।
কৃষি বিভাগ আরো জানান, উচ্চ ফলনশীর জাতের ধান চাষ করে চলিত মৌসুমে আউশের বম্পার ফলন হওয়ায় আউশ চাষে কৃষকরা আগামীতে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত হবে বলে আশা করছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
উপজেলার ২নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের পিপঁড়াখালী গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম খান জানান, আমরা কম খরচে আউশ ধান আবাদ করে ভাল ফলন পেয়েছি, যা আমরা কখনই আশা করিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন বলেন, এই উপজেলার কৃষকরা পূর্বে স্থানীয় আউশ ধানের আবাদ করত। এই বছর আমরা কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে উচ্চ ফলনশীল নতুন ব্রি.ধান-৪৮ আবাদ করার পরামর্শ দেই এবং বীজ, সার ও সেচ সহায়তা প্রদান করি। তাই আউশের উৎপাদন বাড়াতে সরকারি ভাবে এসএসসিপি প্রকল্প -১৭৪০ জন, কৃষি পুরনাবাসন- ২৬০০জন, প্রনদনা কর্মসূচী- ১৬৭০ জন, মোট ৬০১০জন কৃষক কে সহায়তা ও বিনামূল্যে বীজ, সার দেওয়া হয়। কৃষকরা আমাদের পরামর্শে উক্ত জাতের ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছে।
তাদের এ ফলন দেখে এবং তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় এলাকার অন্যান্য কৃষক আগাম বীজ পাওয়ার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। দুই ফসলী জমিতে আরো বেশি ফলন উৎপাদন করা যায় সে ব্যাপারে চাষীদের ধারণা দেওয়া হচ্ছে কৃষি অফিস থেকে। এবারে স্থানীয় বাজারে আউশ ধানের দাম দ্বিগুণ হওয়াতে আশা করছি এই বছরের তুলনায় আগামী বছর আরো বেশি জমিতে এ ধানের আবাদ হবে।