সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জে ব্যাটারিচালিত রিক্সা নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে ব্যাটারি চালিত রিক্সা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জ উকিলপাড়াস্থ প্রেস ক্লাবে সমিতির সভাপতি মনসুরুল আলম জমসেদের সভাপতিত্বে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুরাদ আহমেদ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে মুরাদ আহমেদ বলেন আমরা ব্যাটারি চালিত রিক্সার মালিক/শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে যৌক্তিক দাবী নিয়ে সম্মানিত সাংবাদিক ভাইদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। ব্যাটারি চালিত রিক্সা পৌর শহরে যানযটের জন্য দায়ী হতে পারে না। পৌর শহরে আমাদের মাত্র ২ শ’র মত ব্যাটারি চালিত রিক্সা রয়েছে। আমাদের তুলনায় ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা ও ইজিবাইক অনেক অনেক বেশি। আমরা মনে করি মূলতঃ যানযটের জন্য দায়ী ফেরিওয়ালা ও ফুটপাত দখল করে যারা যত্রতত্র দোকানপাটের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা। পৌর শহরের প্রধান সড়কগুলো যানজটমুক্ত করতে হলে পরিকল্পিত নগরায়ণের লক্ষ্যে মেয়র মহোদয় ব্যাটারি চালিত রিক্সা নিষিদ্ধ না করে রাস্তা সম্প্রসারণসহ ফুটপাত দখলমুক্ত করাটাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। এমনকি ব্যাটারি চালিত রিক্সায় ড্রাই ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। অপরদিকে ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা ও ইজিবাইককে লিকুইড এসিডের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। পরিবেশ দূষণেও ব্যাটারিচালিত রিকশার প্রভাব অনেকাংশে কম। তাই আমাদর দাবি হলো মেয়র মহোদয় সিমিত পরিসরে রাস্তা নির্ধারণ করে দিলে আমরা উপকৃত হবো।
বক্তব্যে আরও বলেন, পেডেল দিয়ে পায়ে চালিত একজন রিক্সা শ্রমিক ২০ বছর পর কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। সেখানে ব্যাটারি চালিত রিক্সা জীবনের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অনায়াসে চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকায় পরিবারের জন্য রোজগারে ভূমিকা রাখতে পারেন একজন রিক্সা শ্রমিক। যেখানে খুলনার সিটি মেয়র ১০ হাজার ব্যাটারি চালিত রিক্সার অনুমোদন দিয়েছেন এবং সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ইজিবাইক পর্যায়ক্রমে রেজিষ্ট্রেশনের আওতায় আনার কথা বলেছেন। সেখানে শত শত দরিদ্র পরিবারের জীবিকার একমাত্র মাধ্যম ব্যাটারি চালিত রিক্সা নিষিদ্ধ করা অত্যান্ত দুঃখজনক।
লিখিত বক্তেব্যে আরও বলেন, মেয়র মহোদয় নিজের পকেটের টাকা দিয়েও অনেক আমাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। মানবিক একজন মানুষ হিসেবেই আমরা উনাকে জানি। কিন্তু সুনামগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃক ব্যাটারি চালিত রিক্সা নিষিদ্ধ করার ঘোষণাকে অমানবিক হিসেবে উল্লেখ করেন সুনামগঞ্জ ব্যাটারি চালিত রিক্সা মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদের সহসভাপতি দেব দুলাল তালুকদার, সদস্য রফিকুল ইসলাম ও খোকন মিয়াসহ নেতৃবৃন্দ। এসময় তারা বলেন, ‘কর্ম করে বাঁচার এটা মোদের অধিকার’।
পৌর শহরের যানজট নিরসন কল্পে পৌর কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করবেন কিনা জানতে চাইলে, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখ্ত বলেন, শহরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে বিশেষ করে ট্রাফিক পয়েন্ট থেকে শুরু করে ফল বাজার ও পান বাজারকে কিচেন মার্কেটে হস্তান্তরিত করার পরিকল্পনা আছে। আশা কিছু দিনের মধ্যেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।
