শেখ রেহানাকে ন্যায়পাল করার প্রস্তাব জাফরুল্লাহ চৌধুরীর
10, January, 2022, 5:30:19:PM
স্বাধীন বাংলা ডেস্ক : গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জাতীয় সরকারের কোন বিকল্প নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, শেখ রেহানাকে ন্যায়পাল নিয়োগ করে তিনি সাধারণ মানুষের জন্য কি করতে পারে আমরা তা দেখতে চাই। তিনি আরো বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংলাপের মাধ্যমে সময় ক্ষেপণ ছাড়া আর কিছুই করতে পারবেন না। এতে করে একদিকে অর্থ ব্যায় অন্যদিকে সময় ব্যায়। জাতির কোন কল্যাণ বয়ে আসবে না।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত মানবন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় জাফরুল্লাহ প্রশ্ন রেখে বলেন, নাসিক নির্বাচনে কিশোর গ্যাংদের উত্থান, গড ফাদার কারা?
সিদ্ধিরগঞ্জের মুক্তিনগরে কিশোরগ্যাং খ্যাত সস্ত্রাসীরা জাতীয় মানবাধিকার সমিতির নারায়নগঞ্জ জেলা কমটির নির্বাহী সদস্য মোসা: মোরশেদা বেগম ও তার পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হাতুড়ি লিটনের সহচর গ্যাং লিডার যুবরাজ (১৮), হাবিব (২২), নসু (৩২), সাইফুল (১৮) ও ইমরান (২১) বাহিনীসহ অজ্ঞাত ৮-৯ জনদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোর্শেদা বেগম, আনোয়ার হোসেন অনু, আব্দুল্লাহ, অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সোনার বাংলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন অর রশিদ, নারায়ণগঞ্জ জেলার জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম কাজল সহ প্রমুখ।
জাফরুল্লাহ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করার জোর দাবি জানিয়ে বলেন, আমার চারপাশে যারা রয়েছে প্রত্যেকেই কোন না কোনভাবে সন্ত্রাসীদের আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছে। অথচ থানায় মামলা হলেও এখনও আসামীরা কেন গ্রেফতার হচ্ছে না। কারা তাদেরকে পৃষ্টপোষকতা করছে? তাদের গডফাদারসহ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
সিদ্ধিরগঞ্জে মামলা হলেও গ্রেপ্তার হচ্ছে না এ মন্তব্য করে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোসাঃ মোর্শেদা বেগম বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের নয়াআটি মুক্তিনগর এলাকায় আমাদের একই পরিবারের ৩ জনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেফতার করছেনা পুলিশ। মামলার আসামি হয়েও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, জুয়া ও কিশোরগ্যাং লিডার সন্ত্রাসী হাতুড়ি বাহিনী এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছে বলে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মাদানীনগর এলাকায় আমার স্বামী আনোয়ার হোসেন আনু (৫০) আমি মোরশেদা বেগম (৩৭) ও আমার ভাগিনা আবদুল্লাকে (৩০) চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে আহত করে মুক্তিনগর এলাকার সন্ত্রাসী লিটন ওড়ফে হাতুড়ি লিটন বাহিনী। সন্ত্রাসীরা আমাকে মারধরের পাশাপাশি শ্লীলতাহানি করে। পাশাপাশি আমার গলা থেকে ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, হাতে থাকা ১ ভরি ওজনের স্বণ্যের ব্যাচলেট, আনুর সাথে থাকা ব্যবসায়ীক কাজের ১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মুক্তিনগর এলাকার মৃত রুস্তম আলীর ছেলে সন্ত্রাসী হাতুড়ি লিটনকে প্রধান করে ৭ জনের নাম উল্লেখ ও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আহত মোরশেদা বেগম চিকিৎসা শেষে থানায় লিখিত অভিযোগ করলে ৩ জানুয়ারি পুলিশ মামলা রুজু করেন।
ঘটনার পর থেকে হামলাকারীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলা না করার জন্য বিভিন্ন হুমকি ধমকি প্রদান করে। মামলা হলেও তারা এলাকা ছাড়েনি। দিব্বি ঘরে বেড়াচ্ছে। রহস্যজনক কারণে তাদের গ্রেপ্তার করছেনা পুলিশ।
সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ এর কিশোর গ্যাং সহ সারা দেশের কিশোর গ্যাংরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের গড ফাদারদেরকে চিহ্নিত করে শিখর থেকে যদি এই সন্ত্রাসীদের উৎখাত করা না যায় তাহলে ভবিষ্যতে যুব সমাজ আরো অন্ধকারে চলে যেতে পারে। নারায়ণগঞ্জ এর ঘটনা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই কিশোর গ্যাংরা যাদের পৃষ্ঠপোষকতায় চলছে তাদেরকে চিহ্নিত করে প্রথমে গ্রেফতার করতে হবে। পরবর্তীতে যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সকলকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতে কোন মানবাধিকার কর্মী ও তার পরিবার এইভাবে রক্তাক্ত না হয় সে ব্যাপারে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী’র হস্তক্ষেপ কামনা করছি।