ফারুক রহমান, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটা এলাকায় কুল চাষে লাভের আশা দেখছেন কৃষকরা। এবছর নগরঘাটা ইউনিয়নের প্রায় ১৫০জন কৃষক কুল চাষ করেছেন। জমির আইল ও মাছের ঘেরের বেড়িবাধে সারি সারি কুলগাছ। আকারে ছোট গাছগুলো। গাছগুলোর উচ্চতা চার থেকে পাঁচ ফুট। কুলের ভারে মাটিতে নুয়ে পড়েছে গাছগুলো। বাগান থেকে প্রতিনিয়ত কুল তুলছেন কৃষকরা। এলাকার অনেকেই কুল চাষ করে ঘুচিয়েছেন বেকারত্ব।
নগরঘাটা গ্রামের কুল চাষি আনিছুর সরদার, কবির গাজী ও ছামাদ মন্ডল জানান, চলতি মৌসুমে তারা নিজের জমি ও লিজ নেওয়া জমিতে উন্নতজাতের আপেল কুল, বাউকুল, নারকেল ও থাই কুলের চাষ করেছেন। এবসব কুল বিঘা প্রতি ১০০ থেকে ১২০ মণ হারে ফলন পাবেন বলে আশা করছেন। কুল বাগান রোপণ ও পরিচর্যায় প্রতি বিঘায় খরচ হয় ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে ও বাজার মূল্য ভাল পাওয়া গেলে খরচের অর্ধেক লাভ পাওয়া যায়।
তালা উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় এ বছর ১৩০ হেক্টর জমিতে কুল চাষ করেছেন কৃষকরা। পরিবহন সেক্টরে কাঁচামাল (তরকারি) বহনে কোন বিধিনিষেধ না থাকায় করোনার নতুন ধরণ ওমিক্রণ কোন প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন।
কৃষকদের সহযোগি প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষিবিদ নয়ন হোসেন জানান, তালা উপজেলায় অন্যান্য কুলের পাশাপাশি এবার সাড়ে ৯ বিঘা জমিতে অগ্রিম জাতের টক-মিষ্টি কুলের চাষ করা হয়েছে। ফলনও মোটামুটি ভাল হয়েছে। আগাম ফলন হওয়ায় ৯০ থেকে ১৩০ টাকা বাজার দরে বিক্রয় করেছেন কৃষকরা। আগামী বছর এই কুলের চাষ আরো বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।
নগরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপু বলেন, কৃষক ধান আবাদ করে অনেক সময় লোকসানের শিকার হন। তার পরিবর্তে কম খরচে ফসলি জমি ও মাছের ঘেরের বেড়িবাধে দীর্ঘমেয়াদি কুল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এজন্য কৃষকেরা বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষে ঝুঁকছেন। গ্রীস্মকালীন টমেটা চাষ পরিদর্শনে এসে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক নগরঘাটা গ্রামকে ‘টমেটা গ্রাম’ নামে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। উৎপাদন এবং রপ্তানি বৃদ্ধি ও বহুমুখিকরণে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে নগরঘাটা ইউনিয়নে একটি অর্থনৈতিক জোন হলে এই এলাকার কৃষকরা উপকৃত হবে।