দীর্ঘ ৪ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি নেই। এতে করে উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। ফলে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির পথও থমকে গেছে। পাশাপাশি সাবেক কমিটির পদে থাকা নেতারাও হতাশ হয়ে অনেকেই এখন রাজনীতির হাল ছেড়ে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে যাচ্ছেন।
২০১৮ সালে জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারন সম্পাদক শাহাদাৎ শোভন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি`র মাধ্যমে জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগ, নবীনগর পৌর ছাত্রলীগ, নবীনগর সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ কমিটি’র মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় এবং সংগঠনের কার্যক্রম নিস্ক্রিয়তা আসায় সংগঠনের কার্যক্রমকে গতিশীল করার লক্ষে বর্তমান কমিটিগুলোকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। সেই থেকে এখন পর্যন্ত নবীনগর উপজেলার কোথাও আর কোন ছাত্রলীগের কমিটি গঠন হয়নি।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীসহ আওয়ামীলীগের দলীয় প্রোগ্রামগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে সংগঠনটি সাবেক নেতা এবং কর্মীরা পালন করে থাকে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমিত চক্রবর্ত্তী বলেন, দীর্ঘদিন যাবত ছাত্রলীগের কমিটি নেই, এতে করে আমরা হতাশ, নতুন নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছেনা। আমরা চাই অতিদ্রুত নবীনগরে সকল ইউনিটে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হোক।
নবীনগর পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক সাইফুর রহমান রকি বলেন, দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের কমিটি নেই, যার ফলে আমাদের কর্মীরা হতাশ হয়ে অনেকেই বিদেশ চলে যাচ্ছে, রাজনীতির হাল ছেড়ে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে যাচ্ছেন। আমরা চাই দ্রুত কমিটি গঠন করা হোক এবং প্রকৃত ছাত্রদের দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হোক।
নবীনগর সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের ১নং সাবেক যুগ্ম আহবায়ক নাছির উল্লাহ বলেন, জীবনের প্রথম প্রেম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগের জন্য জীবনের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করেছি। দীর্ঘদিন যাবত নবীনগরে ছাত্রলীগের কমিটি নেই। এতে করে আমরা হতাশ। স্থানীয় গ্রুপিং এবং কোন্দলের কারণে ছাত্রলীগের কমিটি হচ্ছে না। আমরা চাই গ্রুপিং কোন্দল বাদ দিয়ে নবীনগরে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হোক।
নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ বিদায়ী কমিটি`র সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অনৈক্য এবং অছাত্রদের নেতৃত্বে আসার অপচেষ্টার ফলে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে বিলম্ব হচ্ছে বলে আমি মনে করি, তবে আশাবাদী অতি দ্রুত এর সমাধান হবে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল জানান, আগামী কিছু দিনের মধ্যেই আমরা নবীনগর উপজেলায় ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি`র অনুমোদন দিব। তারা সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে ছাত্রলীগের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করবে।
সর্বশেষ বিদায়ী কমিটি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল্লাহ আল রোমান, সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিম বলেন, নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়েছে নতুন করে লিডারশিপ তৈরি করার জন্য ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র আছে, সে মোতাবেক জেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে বারবার তাগাদা দিয়েও করা যাচ্ছে না। মূলত তাদের গাফিলতির কারণে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি হচ্ছে না। ইতিমধ্যে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি একাধিকবার পরিবর্তন হয়েছে, বর্তমান কমিটির কাছে বারবার বলা হয়েছে তার কোনো সহযোগিতা করছে না।