স্বাধীন বাংলা প্রতিবেদক : মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লেনদেনের সীমা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে এখন থেকে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে যতবার খুশি ততবার লেনদেন করা যাবে। সোমবার এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতদিন এমএফএসের গ্রাহকরা একটি অ্যাকাউন্টে একদিনে সর্বোচ্চ ৫ বার করে টাকা জমা ও উত্তোলন করা যেতো। এছাড়া মাসিক হিসেবে সর্বোচ্চ ২৫ বার টাকা জমা এবং ২০ বার টাকা উত্তোলন করা যেতো। কিন্তু নতুন নির্দেশনায় এই সীমা তুলে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে লেনদেন সীমাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমএফএসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে এবং ইলেকট্রনিক পেমেন্টকে উৎসাহিত করতে ব্যক্তি হিসাবের লেনদেন সীমা পুনঃনির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, এতদিন দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ বারে ৩০ হাজার টাকা জমা তথা ক্যাশ-ইন করা যেতো। আর মাসে ২৫ বারে ২ লাখ টাকা জমা করার সুযোগ ছিল। নতুন নির্দেশনায় এজেন্ট পয়েন্ট থেকে মাসিক ও জমার পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকবে। কিন্তু কতবারে এ পরিমাণ লেনদেন করবেন তা নির্ভর করবে এমএফএস গ্রাহকের উপর। এছড়া ব্যাংক থেকে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে দিনে ৫০ হাজার এবং মাসে ৩ লাখ টাকা লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
টাকা উত্তোলন তথা ক্যাশ-আউটের সর্বোচ্চ সীমা আগের মতো ২৫ হাজার এবং মাসে দেড় লাখ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রেও লেনদেনের সংখ্যা নির্ভর করবে গ্রাহকের উপর। তিনি যতবার খুশি ততবারে এই পরিমাণ টাকা জমা কিংবা উত্তোলন করতে পারবেন।
এদিকে এমএফএসের গ্রাহকেরা একে অপরকে দিনে ২৫ হাজার এবং মাসে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা পাঠাতে পারতেন। এখন থেকে মাসিক লেনদেনের সীমা বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করা হয়েছে। তবে দৈনিক লেনদেনের সীমা আগের মতো ২৫ হাজার টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এদিকে একটি অ্যাকাউন্টে আগের মতোই সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত রাখা যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বর্তমানে দেশের সামগ্রিক পরিশোধ ব্যবস্থায় এমএফএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কোভিড-১৯ এর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এমএফএসের আওতা ও লেনদেনের ব্যাপ্তি প্রসারের পাশাপাশি এ মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে এমএফএস ব্যবহারের প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এমএফএসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে এবং ইলেকট্রনিক পেমেন্টকে উৎসাহিত করতে ব্যক্তি হিসাবের লেনদেন সীমা পুনঃনির্ধারণ করা হলো।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এমএফএস এখন দেশের লেনদেনের বড় একটি খাত হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে যে ১৩টি প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে তাতে সব মিলিয়ে অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৬১ লাখের বেশি। এসব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই দৈনিক গড়ে আড়াই হাজার কোটি টাকার মতো লেনদেন হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের বাইরে নগদ’র এমএফএস সেবা রয়েছে।