নর্থ সাউথ ট্রাস্ট্রির চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
5, May, 2022, 10:56:7:PM
স্বাধীন বাংলা প্রতিবেদক : নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক । প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) উপ-পরিচালক ফরিদ উদ্দিন পাটোয়ারী বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এমএ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিন মো. হিলালী।
মামলার পর দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান এ বিষয়ে বলেন, অনুসন্ধানে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, মামলায় শুধু তাদেরই আসামি করা হয়েছে। তদন্তকালে আরও কেউ সম্পৃক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নর্থ সাউথ সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকটি অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাবে সে অনুসারে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হলো বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী ওই বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ/অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের কিছু সদস্যের অনুমোদনের মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর এবং গোপন করার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।
আসামিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন। পরে বিক্রেতার কাছে থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। এরপর আসামিরা এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। আসামিরা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেরা অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন। এই বেআইনি কার্যক্রম করার ক্ষেত্রে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির আশ্রয়ে ঘুসের আদান-প্রদান করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা, ১৯৪৭ সালের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টম্বর মাসে এসব অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। সে লক্ষ্যে ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর তিন সদস্যের টিমও গঠন করা হয়। অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় বেশকিছু নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে দুই ট্রাস্টিজকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও তারা তাতে সাড়া দেননি।