স্বাধীন বাংলা প্রতিবেদক সাহিত্যের সাথে মানুষের ইতিহাস, প্রথা, সংগ্রাম ও সম্প্রীতির গভীর যোগসূত্র রয়েছে, এজন্য সার্বিক সমাজচিত্রের শিল্পরূপকে উদ্ভাবনের প্রয়োজনে আমরা সাহিত্যকে দর্পণ বিবেচনা করি। সাহিত্য একটি নির্দিষ্ট ভাষিক অঞ্চলের সংস্কৃতির অনিবার্য অনুষঙ্গ এবং সংস্কৃতির গতিশীল ধারাবাহিকতার নিবিড় পাঠ। মানুষের জীবনের সাথে গভীর প্রচ্ছন্নতায় যে শিল্প নিরন্তর খেলা করে সাহিত্য হচ্ছে সেই অনাবিষ্কৃত শিল্পের প্রমিত ভাষণ। আমরা গভীর অনুভূতি ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে সাহিত্যিকদের রচনা এবং উচ্চারণকে অবলম্বন করে মনোভাব প্রকাশ করে থাকি। আমাদের বাংলা সাহিত্য বহু কবি-লেখকের অনেক মূল্যবান ঐশ্বর্যে শোভায় পরিপূর্ণ। তেমনি পৃথিবীর দেশে দেশে, বিভিন্ন ভাষায় রয়েছে অসংখ্য কবি-সাহিত্যিক এবং তাঁদের অভিনব রচনাসম্ভার। সেসব পাঠে- অনুধাবনে-পর্যালোচনায় আমাদের সৃষ্টিশীলতা ও মননশীলতার বিকাশ ঘটে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ব-সাহিত্যের অনন্য ও আলোকিত অংশ এবং এর সৌন্দর্যকে শিল্পসমঝদার ও সাহিত্যপ্রেমীদের সামনে উপস্থাপনের লক্ষ্যে শিল্পকলা একাডেমির আয়োজন ‘বিশ্বসাহিত্য পরিক্রমা’। এই আয়োজনের লক্ষ্য, আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার সাথে সম্পৃক্ত সভ্যজনদের সাথে বিশ্বসাহিত্যের পরিচয় ও মেলবন্ধন সৃষ্টি করা এবং শিল্পের মানুষের বিশেষ উৎকর্ষ সাধন করা। এটি একটি নিয়মিত কর্মসূচি এবং এতে ধারাবহিকভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার এবং অঞ্চলের সাহিত্য নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
৩০ জুন ২০২২ সন্ধ্যা ৭.৩০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে অনলাইনে ‘বিশ্বসাহিত্য পরিক্রমা’ অনুষ্ঠানের ষষ্ঠ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্ব অনুষ্ঠিত হয় উর্দু সাহিত্য নিয়ে । আলোচনার মধ্যে উঠে এসেছে উর্দু ভাষা-সাহিত্যের অতীত ও বর্তমান চর্চা এবং বাংলাদেশে উর্দু সাহিত্যের অবস্থান সম্পর্কে। এ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিশিষ্ট লেখক ও অনুবাদক জাভেদ হুসেন, আলোচনা করেন বিশিষ্ট কবি ও লেখক মুম রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব মো: আছাদুজ্জামান। বক্তব্যে ওঠে আসে, ‘উর্দু সাহিত্য বিশ্বসাহিত্যের অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অংশ।
এ ভাষায় লিখেছেন: মির্জা গালিব, মুহাম্মদ ইকবাল, মীর তাকি মীর, ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ, আমির খসরু, শাহাদাত হাসান মান্টু এবং আলতাফ হোসেন হালী-সহ অনেক গুণী কবি- লেখক। বাংলা সাহিত্যেও উর্দু সাহিত্যের প্রভাব রয়েছে।’ বিশ্বসাহিত্য পরিক্রমা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা কবি সৌম্য সালেক। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে বিশ্বসাহিত্য পরিক্রমা অনুষ্ঠিত হয় আরবী, ফার্সি, ফরাসি, এস্পেনিয়ল এবং ইংরেজি ভাষার সাহিত্য নিয়ে।