পিংকি আক্তার, রাঙ্গামাটি
ঐতিহাসিক ভূষণছড়া গণহত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, খুনিদের বিচার ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবিতে রাঙামাটিতে পালিত হয়েছে ঐতিহাসিক ভূষণছড়া গণহত্যা দিবস। মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল ১১টায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের আয়োজনে ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৮৪ সালের ৩১মে ভূষণছড়া এলাকায় তৎকালীন শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীরা নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়ে ৪ শতাধিক মানুষকে হত্যা করে। কিন্তু এই গণহত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অদ্যবধি কোন বিচার হয়নি। "অতি শীঘ্রই পার্বত্য অঞ্চলের সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দমনে পার্বত্য অঞ্চলে আরো সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধি করে পাহাড়ে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

বক্তারা বলেন, ভূষণছড়া গণহত্যাসহ অসংখ্য বর্বরোচিত ঘটনার শিকার হয়েছে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালিরা, কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হয়নি। উল্টো পাহাড়ে প্রতিনিয়ত অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলের সাধারণ জনগণ এসকল সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হত্যা চাঁদাবাজি ও নির্যাতনে অতিষ্ট। তাই পাহাড়ে কাঙ্খিত শান্তির সুবাতাস ফিরিয়ে আনতে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, হত্যা গুম, খুন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এখনই রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের রাঙ্গামাটি পৌর কমিটির সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মোঃ আলমগীর কবীর।

এছাড়া উক্ত মানববন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদা আক্তার, মোঃ হাবিব আজমসহ গণহত্যার শিকার নিহতদের পরিবার বর্গ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালের এই দিনে রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার তৎকালীন শান্তি বাহিনীর হাতে খুন হওয়া ৪ শতাধিক নিরীহ বাঙালি নারী পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যার পরবর্তী দীর্ঘ ৩৮ বছরেও বিচার পায়নি নিহতদের স্বজনরা। নিহতদের স্মরণে প্রতিবছর এ দিনটিতে বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসছে বাঙালিভিত্তিক সংগঠনগুলো।